দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স পঞ্চাশের পর হতে পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সবাইকেই শারীরিক, মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যেদিয়ে যেতে হয়। যে কারণে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, বিপাকহারেও পরিবর্তন চলে আসে।

বয়স যখন কম থাকে, তখন অনেক কিছুই সহজে আয়ত্ত করা যায়। বয়স বাড়লে তা রপ্ত করা বেশ কঠিন হয়। যেমন রোগা হওয়ার স্বপ্ন! তা যে শুধু মনে মনেই পোষণ করছেন, এমনটি নয়। নিষ্ঠা সহকারে ডায়েট, শরীরচর্চাকে সঙ্গী করেছেন, তবে ওজনযন্ত্রে তেমন কোনও প্রভাব পড়ছে না। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এই সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে বয়স।
পঞ্চাশের পর হতে পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সকলকেই শারীরিক, মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই যেতে হয়। যে কারণে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, বিপাকহারেও পরিবর্তন চলে আসে। তাই এই সময় ওজন নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিনই হয়ে পড়ে। আর তখন বাড়তি ওজনের দোসর হয়ে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হার্ট-লিভারের সমস্যা হাতছানি দেয়। পুষ্টিবিদ অর্চনা বাত্রা বলেছেন, “এই সময় বিপাকহার ক্রমশ কমতে শুরু করে। হরমোনের ব্যাপক হেরফেরও হয়। তাই খাওয়া-দাওয়ার উপর বিশেষভাবে নজর না দিলে ওজন ঝরানো আরও বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।”
অর্চনা জানিয়েছেন যে, বয়স পঞ্চাশ হলেও সকলের ক্ষেত্রেই শরীরচর্চা ও ডায়েট ভিন্ন হওয়া চাই। কার শারীরিক গঠন কেমন- শরীরে কিসের ঘাটতি কিংবা কোন উপাদান বেশি, সেই বুঝেই সবটা নির্ধারণ করতে হবে। সারাদিন ধরে কী খাচ্ছেন, কতোটা খাচ্ছেন তা মাপা, অর্থাৎ ক্যালোরি ‘মনিটর’ করার জন্য মোবাইল অ্যাপের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।
কী কী মাথায় রাখতে হবে?
# ডায়েটে কার্বহাইড্রেটের মাত্রাও কমাতে হবে, ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবারই বেশি করে খেতে হবে। ফাইবার হজমশক্তি আরও উন্নত করে। বয়স যা-ই হোক না কেনো, হজমের গোলমালে নাজেহালও হতে হবে না। হজম ঠিকঠাক হলে ওজনও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
# এজন্য মিষ্টি খাওয়া কমাতে হবে। মিষ্টির প্রতি যতোই ভালোবাসা থাকুক না কেনো, তা বেশি খাওয়া চলবে না। ৫০-এর পর ওজন বশে রাখতে মিষ্টিপ্রেমে অবশ্যই রাশ টানতে হবে। মিষ্টি খেলেও নির্দিষ্ট সময় নিয়ম মেনেই খেতে হবে। আর ইচ্ছেমতো মিষ্টি খেয়ে ফেললে কিন্তু চলবে না।
# সকালের দিকে ভারি খাবার খাওয়াটা জরুরি। অনেকেই সকালের নাস্তা খান না, বা খেতে খেতে বেলা পার করে ফেলেন। তেমনটি করলে মোটেও চলবে না। ঘড়ি ধরে খাবার খেতে পারলেই আরও ভালো। ডায়েটে ঘরে তৈরি করা খাবার বেশি করে রাখতে হবে। আগের দিন, পরের দিনের মেনু নির্ধারণ করে রাখুন। কী খেতে হবে, তা মাথায় থাকলে বাইরের ভাজাভুজির প্রতিও আগ্রহ কমে আসবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org