দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিপাকের গতি বাড়ানোর মূল কার্যকরী পন্থাগুলো হলো স্বাস্থ্যকর ও প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ভারি খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে পানি খাওয়া।

শরীরে মেদ জমলে অনেকেই বলবেন, বিপাকপ্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। কারণ হলো সুস্থ জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজন উন্নত বিপাকপ্রক্রিয়া। এটি এক ধরনের প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে শরীর খাবার থেকে প্রয়োজনীয় শক্তিও সঞ্চয় করে। তাই খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসের উপর নির্ভর করছে দেহের বিপাকপ্রক্রিয়া কী ধরনের হবে। আর যদি বিপাকক্রিয়া ঠিকমতো না হয়, তা হলেই হয়ে যাবে গন্ডগোল। তখন যে খাবার খাচ্ছেন তা ঠিকমতো পাচিত হতে না পেরে পাকস্থলীতেই জমতে থাকবে। যে কারণে বদহজম, গ্যাসের সমস্যা বাড়বে। বিপাকের হার কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে টিপ্স দিয়েছেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।
বিপাকের গতি বাড়ানোর মূল কার্যকরী পন্থাগুলো হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করা এবং ভারি খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে পানি খাওয়া। গবেষকরা বলেছেন, খাবার খাওয়ার পর তা লালারসের সঙ্গে মিশে পাকস্থলীতে চলে যায়। সেখানে নানা রকম পাচকরসের সঙ্গে মিশে সেই খাবারটি পাচিত হতে শুরু করে। খাবার থেকে জরুরি ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ উপাদান ও ফাইবার ছেঁকে নেয় শরীর। আর তা থেকেই শক্তি তৈরি হয়। ঘুমোনোর সময় শরীর বিশ্রামে থাকলেও এই শক্তি সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেই সক্রিয় রাখে। কাজেই বিপাকের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটলেই, এক দিকে যেমন শরীর তার প্রয়োজনীয় কোনো পুষ্টি পাবে না, তেমনি হরমোনের ক্ষরণেও তারতম্য হতেই থাকবে।
তাহলে কী করা উচিত?
হার্ভার্ডের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, খাবার সব সময় মেপে খেতে হবে। পরিমিত আহারই বিপাকের হার আরও বাড়াবে। পাকস্থলীর যতটুকু গ্রহণক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে বেশি খেতে শুরু করলে বদহজমের সমস্যা আরও বাড়বে।
মেপে খাওয়াই কেবল নয়, খাবার সময় নিয়ে চিবিয়েও খেতে হবে, যাতে খাবারের কণাগুলো লালারসে মিশে পাকস্থলীতে পৌঁছাতে পারে।
এক এক জনের শরীরের গঠন, তার উচ্চতা, বয়স, লিঙ্গ এবং তার কাজের ধরনের উপর বেসাল মেটাবলিক রেটও নির্ভরশীল। খাওয়াদাওয়ার পর শরীরে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয় ও যে ক্যালোরি ক্ষয় হয়, তাকেই বলে বেসাল মেটাবলিক রেট। অনেক সময় আমরা এমন কিছু খাবার খাই, যাতে ক্যালরি থাকে প্রচুর পরিমাণে। এই ক্যালোরিটি যদি ‘বার্ন’ না করা হয়, তবে সেটি আমাদের শরীরে চর্বি হিসেবে জমতে থাকে। আর তখন বাড়তে থাকে মেদসহ নানা শারীরিক সমস্যা। তাই বেসাল মেটাবলিক রেট ঠিক রাখতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবারই পরিমিত খাওয়া উচিত। ডায়েটে অবশ্যই রাখতে হবে প্রোটিন। চিকেন, গ্রিক ইয়োগার্ট, মাছ, বিন্স, সয়াবিন, চিয়া বীজ, চিজ় পরিমিত খেলে প্রোটিনের চাহিদা মিটে যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org