দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘কিসের এতো আন্দোলন, সুখে থাকতে ভূতে কিলায়’- গত বছরের জুলাই মাসে সারাদেশে যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে উত্তাল, তখন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে এই বিতর্কিত স্ট্যাটাস দেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সমালোচিত চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা।

এমন স্ট্যাটাসে সেই সময় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এই নায়িকা। শিলার এই স্ট্যাটাস একেবারেই ভালোভাবে নেননি নেটিজেনরা। করেন কড়া প্রতিবাদও। নেটিজেনদের আক্রমণের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে পোস্টের কমেন্ট অপশন বন্ধ রাখেন।
তারপর নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়ে একই দিন বিকেল ৪টার দিকে স্ট্যাটাসে সংযোজন আনেন তিনি। তারপর গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আজও ক্ষমা চাননি এই অভিনেত্রী শিরিন শিলা। বরং বহাল তবিয়তে প্রকাশ্যে ঘুরছেন বহুল আলোচিত ক্যাসিনো কাণ্ডের অন্যতম হোতা যুবলীগ নেতা এনামুল হক আরমানের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হিসেবে খ্যাত শিরিন শিলা!
এমনকি ঈদের বিটিভির ম্যাগাজিন ‘চাওয়া পাওয়া’ অনুষ্ঠানে একটি পর্বে অতিথি হন। শিরিন শিলা বিটিভির অনুষ্ঠানের অতিথি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। প্রশ্ন উঠেছিল যে, ছাত্র-জনতার ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধে যিনি অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি এখন কীভাবে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারে জায়গা পান? তাকে বিটিভিতে কাজের সুযোগ দিলো কে বা কারা? এমন সমালোচনা নজর এড়ায়নি বিটিভি কর্তৃপক্ষেরও। ঈদের দিন রাতে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি প্রচার হলেও শেষ পর্যন্ত শিরিন শিলার অংশটুকু কেটে দেওয়া হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করেন অনুষ্ঠানটির গ্রন্থণার দায়িত্বে থাকা কবি আসাদ কাজল।
তিনি বলেন, জুয়েল আইচ এই অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়ার কথা ছিল। তবে তার ব্যস্ততার কারণে না পাওয়াতে শিরিন শিলাকে অতিথি করা হয়। আমরা আসলে অবগত ছিলাম না যে, তিনি গণঅভ্যুত্থানের বিপক্ষে ছিলেন ও ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সমালোচিত হন। বিষয়টি যখন আমাদের নজরে উঠে আসে তখন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করলে তারা অনুষ্ঠানে শিরিন শিলার অংশটুকু বাতিলের সিদ্ধান্ত দেন।
শিরিন শিলা মডেলিং-এর মাধ্যমে শোবিজে নাম লেখান। শুরুতেই বেশকিছু মিউজিক ভিডিওতেও তাদে দেখা যায় তাকে। তারপর নাম লেখান নাটক-সিনেমায়। ২০১৪ সালে ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘হিটম্যান’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে শিরিন শিলার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org