দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত খসখসে ত্বক কিংবা চুলকানি, র্যাশ ও কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগও দেখা দিতে থাকলে তা কিডনির সমস্যার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে।
নিছক চর্মরোগ ভেবে মলম লাগালে কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেয়ে ফেললেই কিন্তু মুশকিলে পড়বেন। তাতে অসুখ তো কমবেই না, বরং আরও বেড়ে যাবে।
কিডনির অসুখ অর্থই যে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে কিংবা প্রস্রাবের রং বদলে যাবে, তা নাও হতে পারে। এমন অনেক লক্ষণ দেখা দিতে থাকে, যেগুলো সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যান অনেকেই। যেমন- হঠাৎ করে যদি দেখা যায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে, সারা গায়ে চুলকানি দেখা দিয়েছে বা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ হলে যেমন- আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে, তেমন কোনো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাহলে অবশ্যই সাবধান হতে হবে। নিছক চর্মরোগ ভেবে মলম লাগালে কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেয়ে ফেললে মুশকিলে পড়তে পারেন। তাতে অসুখ তো কমবেই না, বরং আরও বেড়ে যাবে।
‘ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়’ (সিকেডি) নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে- কমেনি। কয়েক মাস আগেই, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) দেশটির নানা জায়গায় সমীক্ষা চালিয়ে জানিয়েছিল যে, ২০১১ সাল হতে ২০২৩ সাল অবধি ভারতে কিডনির রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১১.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬.৩৮ শতাংশ উঠেছে। আক্রান্তদের তালিকায় শিশুরা রয়েছে। রিপোর্টে দেখা যায়, প্রতি বছর ভারতে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হন কিডনির রোগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় দেরিতে হয়ে থাকে, যে কারণে অসুখ বিপজ্জনক জায়গায় চলে যায়। রোগ নির্ণয়ে কেনো এতো দেরি হয়, তার কারণ হলো সঠিক সময় রোগের লক্ষণ চিনতে না পারা। কিডনির রোগ হলে প্রস্রাবের সমস্যা ছাড়াও যেসব উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকে, সেগুলো নিয়ে সাবধান করেছেন চিকিৎসকরা। যারমধ্যে কিছু লক্ষণ একেবারেই অজানা।
খসখসে ত্বক কিংবা চুলকানি, র্যাশ ও কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ দেখা দিতে থাকলেও, কিডনির সমস্যার কারণেও তা হতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘প্রুরিটাস’। এটি এক ধরনের চর্মরোগ, যা নানা কারণে হতেই পারে। মূলত শরীরে প্রদাহ বেড়ে গেলে ও বেশি মাত্রায় টক্সিন জমা হতে থাকলে, তখন এই সমস্যাটি দেখা দেয়। দেশের ‘ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য জানিয়েছে, কিডনির অসুখের সঙ্গে প্রুরিটাসের নিবিড় যোগসূত্রও রয়েছে।
চিকিৎসা কী?
প্রুরিটাস হলে চিকিৎসকরা শরীরের লক্ষণ দেখে পরীক্ষা করেন যে, কিডনির কোনো রোগ হচ্ছে কি না। তাহলে হিমোডায়ালিসিস করার প্রয়োজন পড়ে। তবে তাতেও যেসব দূষিত পদার্থ শরীরে থেকে বের করা যায় তা নয়। চর্মরোগ নিরাময় করতে মলম এবং খাওয়ার ওষুধও দেন চিকিৎসকরা। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে ‘লাইট থেরাপি’ করানো লাগতে পারে। শরীরে যে জায়গায় র্যাশ কিংবা ঘা হচ্ছে, সেখানে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পাঠিয়ে সেটি নিরাময়ের চেষ্টা করা হয়। তবে যে চিকিৎসাই হোক না কেনো, তা লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর পরই শুরু হলে নিরাময় খুবই তাড়াতাড়ি হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org