দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফার্ন বিশেষ ধরনের ভাসকুলার গাছ, যা ফুল কিংবা বীজ উৎপাদন করে না। এদের প্রজনন হয় স্পোর কিংবা রেণুর মাধ্যমে।

সাধারণত ছায়াযুক্ত, আর্দ্র এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্মায় গাছটি। সম্প্রতি ব্লেকনাম ওরিয়েন্টালে প্রজাতির ফার্ন নিয়ে গবেষণার সময় গাছটির মধ্যে বিরল এক খনিজ তৈরির উপযোগী মোনাজাইট পদার্থের স্ফটিক খুঁজে পেয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের দাবি, গাছটি প্রাকৃতিকভাবেই মোনাজাইটের অত্যন্ত ছোট স্ফটিক তৈরি করতে পারে। এই বিষয়ে চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ভূ–রসায়নবিদ লিউকিং হে বলেছেন, এই আবিষ্কারটিকে বলা যায় সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। ফার্নের এই অনন্য ক্ষমতার তথ্য উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় নতুন সুযোগও করে দেবে।
মোনাজাইট মূলত বিরল খনিজ উপাদানের একটি প্রধান উৎসও। বিজ্ঞানী হে বলেছেন, কিছু ফার্ন পূর্ব থেকেই এমন খনিজ সঞ্চয় করার জন্য পরিচিত। এখন দেখা যাচ্ছে যে, ফার্ন কেবল ধাতু সঞ্চয়ই করে না; বরং গাছের অভ্যন্তরে মোনাজাইট তৈরি করে। এতোদিন মোনাজাইট কেবল পৃথিবীর গভীরে থাকা চরম তাপ এবং চাপের মধ্যে তৈরি হয় বলেই ধারণা করা হতো। প্রথমবারের মতো এটিকে গাছের ভেতরে তৈরি হতে দেখা যায়। গাছের ভেতরে থাকা মোনাজাইট কণা অত্যন্ত ক্ষুদ্র কিংবা ন্যানো স্কেলে থাকে।
বিজ্ঞানীদের মতে, ফার্নের মধ্যে থাকা খনিজ স্ফটিক আবিষ্কার একটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ফাইটোমাইনিং ধারণাকেও জনপ্রিয় করতে পারে। এই পদ্ধতিতে প্রথাগত খনি খননের চেয়েও প্রাকৃতিক উপায়ে মাটি হতে ধাতু নিষ্কাশন করা হয়। ব্লেকনাম ওরিয়েন্টালের মধ্যে ন্যানো আকারের মোনাজাইট পদার্থের আবিষ্কার এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন বিরল খনিজ উপাদান ইলেকট্রনিক যন্ত্র, পরিবহন এবং আধুনিক শিল্পে নানাভাবে এটি ব্যবহৃত হয়। এইসব উপাদান অত্যন্ত বিরল হওয়ার পাশাপাশি নিষ্কাশনপদ্ধতিও বেশ ব্যয়বহুল। এগুলো খনি হতে তোলার কারণে পরিবেশেরও বেশ ক্ষতি হয়ে থাকে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org