দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাতের আকাশে তাকালে আমরা যে তারা দেখি, তার প্রতিটিই এক একটি জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড। কল্পনাতীত উচ্চ তাপমাত্রায় এই নক্ষত্রগুলোয় অত্যন্ত দাহ্য রাসায়নিক পুড়তে থাকায় প্রতি মুহুর্তেই প্রচণ্ড সব বিস্ফোরণ ঘটছে এই তারাগুলোয়। তেমনিই এক মহাজাগতিক বিস্ফোরণ লক্ষ্য করলো পৃথিবী, যা তার প্রচণ্ডতায় এতোদিনকার যে কোনো মহাজাগতিক বিস্ফোরণকে হার মানিয়েছে।
বিজ্ঞানীদের বর্ণনামতে, দানবীয় এই বিস্ফোরণের তাৎক্ষণিক এই সাক্ষী আমরা হতে পারিনি কারণ নক্ষত্রটি আমাদের থেকে ৩.৭ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। অর্থাৎ সেখান থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগবে ৩.৭ বিলিয়ন বছর। বিজ্ঞানীরা এও বলছেন যে, এই বিশাল দূরত্বটা না থাকলে বিস্ফোরণের ফলে যেই শক্তি উৎপাদিত হতো, তা পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলো। আর বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টিকারী বিস্ফোরণ বিগ ব্যাং ছাড়া এই মহা বিস্ফোরণের সঙ্গে তুলনা দেয়ার মতো আর কোনো মহাজাগতিক বিস্ফোরণ খুঁজে পাচ্ছেন না।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নাসার মহাকাশে পরিভ্রমণরত টেলিস্কোপগুলো এই বিস্ফোরণের সাক্ষী হয়। বিজ্ঞানীরা এই বিস্ফোরণকে গামা বিস্ফোরণ বলছেন, অর্থাৎ যে বিস্ফোরণে একটি নক্ষত্রের মৃত্যু হয়, একটি ব্ল্যাক হোল এবং সুপারনোভার সৃষ্টি হয় এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। বিস্ফোরিত গ্রহটি আমাদের গ্যালাক্সির নক্ষত্র সূর্যের চেয়েও কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ গুণ বড় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
গত ২০ বছর ধরে নাসার টেলিস্কোপগুলো গড়ে প্রতি দুই দিনে এ ধরনের একটি বিস্ফোরণ রেকর্ড করে আসছে। ১৯৯৯ সালে নাসা যে অতিকায় যেই বিস্ফোরণটি প্রত্যক্ষ করে, সেটাকেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী মহাজাগতিক বিস্ফোরণ হিসেবে ধরা হচ্ছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক এই বিস্ফোরণ ১৯৯৯ সালে রেকর্ডকৃত সেই বিস্ফোরণের চেয়েও অন্তত ৫ গুণ শক্তিশালী ছিলো।
তথ্যসূত্র: দি গার্ডিয়ান