দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টানা অবরোধের কারণে সরবরাহ কম থাকায় সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে সবজি, মাছসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রি ।
বাজারে কেজিতে সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। বাজারে প্রতিবছর যখন নতুন আলু ওঠে তখন দাম বেশি থাকলেও প্রতিদিনই ৫/১০ টাকা করে কেজি প্রতি কমতে থাকে। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। অবরোধের কারণে আমদানি না থাকায় গত কয়েক দিনের ব্যবধানে নতুন আলুর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩৫-৪০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নতুন আলুর দাম। এক লাফে ৪ দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার নতুন আলু আজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, অবরোধের কারণে আলু আসতে পারেনি। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।
গত সপ্তাহে যে শিম বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায় এখন সে শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। ৪০ টাকার ঢেঁড়স এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। ৫০ টাকার করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আবার ১৫ টাকার পেঁপে ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কাঁচামরিচ ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে লম্বা বেগুন ৪০-৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০-৬২ টাকা, ঝিঙ্গা ৩৫-৪৫ টাকা, মুলা ৩০-৪৫ টাকা, পুরনো আলু অবশ্য আগের মতোই ২০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পটল ৩০-৩৫ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, টমেটো ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য টমেটোর দাম অবরোধের আগেও এমনই ছিল। তবে যেহেতু শীত পড়া শুরু হয়েছে তাই টমেটোর দাম এখন কমার কথা। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে এসব জিনিসের দাম বেড়েছে।
অবরোধের কারণে প্রতি পিস ফুলকপি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া মিডিয়াম সাইজের ৬০ থেকে ৯০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪৫-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ জালি অবরোধের আগে বিক্রি হয়েছে ৩০-৪৫ টাকার মধ্যে।
অবশ্য সে তুলনায় বাড়েনি শাকের দাম। সব ধরনের শাকের দাম, লাল শাক, কলমি শাক, লাউ শাক, পালং শাক, মুলা শাক, পুঁই শাক, ডাটা শাকসহ নানা ধরনের শাকের আঁটি আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে।
অবরোধের কারণে মাছের দাম বেশ বেড়েছে। রাজধানীর একজন মাছ ব্যবসায়ী বললেন, দূর থেকে কোন মাছ আসতে পারছে না অবরোধের কারণে। রাজধানীর আশে-পাশের পুকুর-ডোবা, নালা থেকে আসছে মাছ। সে কারণে মাছের দাম বেশ বেড়েছে। ছোট সাইজের রুই ১৫০ থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, বড় সাইজের রুই ২৫০ থেকে বেড়ে ৩০০ টাকা, ছোট কাতল ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা, ১৩০ টাকার শরপুঁটি এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। শৈল মাছ, পাঙ্গাস, শিং , বেলে মাছ, বাইম, হাই ব্রিড কৈ, বড় টেংরা, চিংড়ি, বোয়াল এবং তেলাপিয়া মাছ গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে।
একমাত্র ব্যতিক্রম আদা, রসুন ও পেঁয়াজ। গত সপ্তাহের তুলনায় এই তিনটি পণ্যের দাম আরও কমেছে। দেশি ৯০ টাকা জেজি দরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৮০ থেকে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। রসুন ৮০ থেকে নেমে ৭০ টাকা। ১৮০ টাকা কেজির আদা এখন কমে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেছেন, পাইকারী মার্কেটগুলোতে অবরোধের দোহায় দিয়ে জিনিসের দাম বেশি রাখছে। যে কারণে তাদের সেভাবেই বিক্রি করতে হচ্ছে। কবে নাগাদ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা কেওই বলতে পারে না। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা কি দাঁড়াবে সে চিন্তাই দিশেহারা সাধারণ মানুষ। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে সব কিছু নাগালের মধ্যে থাকবে এমন প্রত্যাশা করা ছাড়া কিছুই করার নেই কারোর।