দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ হঠাৎ করেই সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না। এমন ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে গুজব উঠেছে এরশাদ নিখোঁজ।
এরশাদ নিখোঁজের পিছনে কি রহস্য আছে তা কেও জানে না। হয়তো এমন হতে পারে হঠাৎ করে নির্বাচন থেকে সরে আশায় সরকারি মহল ক্ষিপ্ত হতে পারেন এমন আশংকায় তিনি আত্মগোপন করেছেন। আবার এমনও হতে পারে যাতে সরকারি মহল তাকে আবার নির্বাচনে আসার জন্য চাপ দিতে পারেন। এমন বেশ কিছু আশংকা দেখা দিয়েছে জনমনে।
গতরাতেই জাতীয় পার্টির দুই নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এরশাদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয় এবং নির্বাচন বিষয়ে কথা হয়েছে এমনটা ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের কোন বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে আসেনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসলে কি কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি এখনও।
এদিকে এরশাদের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। ইতিমধ্যেই ভারতসহ বেশ কিছু দেশের মধ্যে এরশাদের নির্বাচন বর্জনে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সকলেই মনে করছেন, এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে আওয়ামীলীগের পক্ষে নির্বাচন করা দুরুহ হয়ে পড়বে। একা নির্বাচন করলে সে নির্বাচনের কোনই গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। কারণ এরশাদের জাতীয় পার্টি বর্তমানে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম পার্টি। এরশাদের জাতীয় পার্টি গত নির্বাচনেও ২৭টি আসন পেয়েছেন। যেখানে বিএনপির মতো এতো বড় একটি পার্টি পেয়েছিলেন মাত্র ২৯টি আসন। সেই দিক থেকে দেখলে জাতীয় পার্টির গুরুত্ব রয়েছে। যদিও দলের চেয়ারম্যান নানা কারণে দেশে বিদেশে সকলের কাছেই সমালোচিত ব্যক্তিত্ব। তবে জাতীয় পার্টির যে গুরুত্ব রয়েছে তা অন্তত গতকাল নির্বাচন থেকে সরে আসার পর বোঝা গেছে। বৃহত্তম দল বিএনপিও স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় পার্টির নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণায়। যদিও ক’দিন আগেই এরশাদকে ‘মোনাফেক’ বলে সম্বোধন করেছিল বিএনপি।
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ জাতীয় পার্টির সরে আসার কারণে বেশ বেকায়দায় রয়েছে। বিরোধী দলের অবরোধ এবং নির্বাচন থেকে জাতীয় পার্টির সরে দাঁড়ানোর মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাড়ি গণভবনে এই বৈঠক হবে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে সব কথার শেষ কথা, এরশাদের নিখোঁজের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে এখন পর্যন্ত তেমন কোন সংবাদ আসেনি। তিনি আসলে কোথায় আছেন সে বিষয়ে কোন নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। তবে তিনি যেখানেই থাকুননা কেনো ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর সব কিছু পরিষ্কার হবে। এমনটাই ধারণা সকলের। আর সে জন্য মনোনয়নের শেষ দিন তক অপেক্ষা করা ছাড়া কোন গত্যান্তর নেই। তবে এর আগে যদি অলৌকিক কোন সমাধান ফর্মূলা আসে তাহলে ভিন্ন কথা। সেক্ষেত্রে দেশবাসী হাফ ছেড়ে বাঁচতো!
কার্টুন: সাদাত (সৌজন্যে)