দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এরশাদকে নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। তিনি হাসপাতালে বসে কখনও রওশনকে সমন্বয় করে কাজ করতে বলছেন। আবার কখনও বলছেন আত্মসমর্পণ করিনি, শপথ নেবেন না। আসলে কোনটি সঠিক?
এরশাদকে বৃহস্পতিবার র্যাব গ্রেফতার করেছে প্রথমে এমন খবর আসে সংবাদ মাধ্যমে। তারপর র্যাব-১ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, এরশাদ অসুস্থ তাকে সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়েছে। এরপর থেকে গত ক’দিন ধরেই চলছে নানা ধরনের কথা। ওইদিনই রাতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারও সাংবাদিকদের বলেন, এরশাদ অসুস্থ-তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু এর পর থেকে শুরু হয় নানা ধুম্রজাল। একের পর এক ঘটছে ঘটনা। এরশাদের একান্ত সহকারি ববি হাজ্জাজ বেশ কয়েকবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এরশাদকে আটকে রাখা হয়েছে-তিনি অসুস্থ নন। এমন নানা কথা বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা এখনও পরিষ্কার নয়।
সিএমএইচে অবস্থানরত সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গতকাল সংবাদ মাধ্যমকে বললেন, ‘এ কোন দেশে আছি! আমি নির্বাচনে যাবো না এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। কেন নির্বাচনে যাবো না সেটাও বলেছি। পাতানো এবং একতরফা নির্বাচন দেশের জন্য কোন উপকারে আসবে না। সেটা কাকে বোঝাবো প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলাম। নির্দেশ দিলাম দলীয় নেতাকর্মীদের। তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলো। নির্বাচন কমিশন বলল, প্রত্যাহার করা যাবে না। এমনকি আমার নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে চিঠি দিলাম। সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থিতা প্রত্যাহার হবে না। কি ভাবে বললে হবে, তা-ও তারা বলেনি। এই কমিশন কি করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। তারা তো প্রাথমিক পরীক্ষায় ফেল করেছে। অতীতে এমন রেকর্ড কোন কমিশন স্থাপন করতে পারেনি।’
রোববার সকালে এরশাদ আরও বলেছেন, ‘নিজের কথা আর কি বলব। আমি সুস্থ মানুষ, আমাকে অসুস্থ বানিয়ে রাখা হয়েছে। আমাকে আটকে রেখে দল ভাঙার চেষ্টা চলছে। যত চেষ্টাই তারা করুক না কেন, তাতে কোন লাভ হবে না। দলের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে। যত প্রলোভন আর ভয়ভীতি দেখানো হোক না কেন নেতাকর্মীরা তা উপেক্ষা করবে। দেশবাসী দেখছে। জনগণ তো বোকা নয়। আমার কি অপরাধ আমি নির্বাচনে যাবো না এটা আমার সিদ্ধান্ত। সরকার কেন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে, বলপূর্বক আমাকে এমপি বানাবে, সরকার বুঝতে পারছে না যে তাদের কোন কৌশলই কাজে আসবে না- তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন।’
এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেখতে সিএমএইচে স্বস্ত্রীক যান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। গতকাল বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সেখানে যান। এ সময় তিনি এরশাদের খোঁজখবর নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদও এসময় তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এরশাদকে নিয়ে জল্পনার কোন শেষ হচ্ছে না আপাতত। এরশাদ ও তার ভাই জিএম কাদেরের মনোনয় নির্বাচন কমিশন বাতিল করেনি। অপরদিকে রওশনসহ জাতীয় পার্টির ১৮টি আসন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। এমন অবস্থায় এরশাদের জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত আসলে কি তা মোটেও বোঝা যাচ্ছে না। এখন সময়ই বলে দেবে কি হবে এরশাদ আর তার জাতীয় পার্টির।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত পোনে ১২টায় এরশাদকে তার বারিধারার বাসা থেকে র্যাব আটক করে সিএমইচএ নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন। এরশাদ নিজেই দাবি করেছেন তাকে আটক রাখা হয়েছে।