দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আউট সোর্সিংয়ের নামে প্রতারণার ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে। এ ব্যাপারে সময় থাকতে প্রতারণা রোধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
সামপ্রতিক সময়ে দেশের বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় এক শ্রেণীর সুবিধাবাজ লোক এসব বেকার যুবক ও যুবতীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। প্রতারণার খপ্পড়ে পড়ে বহু অসহায় মানুষ নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছে। একদিকে বেকারত্বের হাত থেকে রেহায় পেতে বর্তমান প্রজন্ম হন্যে হয়ে ঘুরছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। অপরদিকে এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে। এভাবে তারা যুবক-যুবতীদের কাজ দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এরা প্রথমে সবাইকে বলছে টাকা দিয়ে পয়েন্ট কিনতে তারপর বলা হচ্ছে, প্রতিদিন ১/২ ঘণ্টা কম্পিউটারে বসে শুধু ক্লিক করলেই মাসে ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০/২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এভাবে মোটা অংকের টাকা হাতে আসার পর রাতের অন্ধকারে এসব প্রতিষ্ঠান গায়েব হয়ে যাচ্ছে।
এমন ঘটনা ঢাকা, যশোর, রংপুর ও বগুড়াসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘটেছে সামপ্রতিক সময়ে। রাতারাতি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গায়েব হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
রংপুরে আউট সোর্সিংয়ের নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন দু’হাজারের অধিক সদস্য। প্রতারণার অভিযোগে কোম্পানির এমডিকে গ্রেফতারের পর ১৯ জুন জেলহাজতে পাঠানো হয়। ২০ জুন সকাল থেকেই ওই অফিসের দরজায় ভিড় জমায় প্রতারিত সদস্যরা। বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত পেতে তারা এখন পুলিশ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিনিয়োগকারীদের অনেকেই ঘরে বসে মোটা অংকের টাকা আয়ের আশায় দোকান, জায়গাজমি বিক্রি করে, এমনকি ঋণ করে বিনিয়োগ করেছেন।
রংপুর ডিবি পুলিশের এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ডিজিটাল ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টার (ডিআইটিইসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠান শহরের কাচারী বাজার এলাকায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। তারা ম্যাক্সল্যান্সার ডট কম (িি.িসধীষধহপবৎ.পড়স) নামের ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের ক্লিকের কাজ করে বলে প্রচার চালায়। এর মধ্যে তাদের সদস্য সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। এসব সদস্যের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাতিয়ে নিয়েছেন ২ কোটি টাকারও বেশি। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সদস্যদের পাওনা না দেয়ায় সদস্যরা চাপ দিলে ডিআইটিইসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক কয়েক দিনের জন্য আত্মগোপন করেন এবং অফিসের সব কম্পিউটার ও আসবাবপত্র গোপনে সরিয়ে ফেলে। ১৯ জুন এনামুল হক তার অফিসের বাকি জিনিসপত্র নেয়ার জন্য রংপুরে এলে শংকিত বিনিয়োগকারীরা তাকে আটক করে ডিবি পুলিশে সোপর্দ করে। ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে জেলহাজতে পাঠায়। এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতারিত সদস্য লামিয়া আক্তার বাদী হয়ে এমডি এনামুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এভাবে সারাদেশে প্রতারণার সংখ্যা বাড়ছে। ঘরে বসে কিছু টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে অনেক বেকার যুবক-যুবতী এসব প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। রেডিও-টিভি ও প্রচার মাধ্যমে সরকারি নির্দেশনা আসা জরুরি। যাতে করে কেও আর এসব প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রতারিত না হন।