দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জন্ডিস আসলে কোন রোগ নয়, এটি রোগের লক্ষণ মাত্র। চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়াকে আমরা জন্ডিস বলে থাকি। জন্ডিসের মাত্রা বেশি হলে হাত, পা এমনকি সমস্ত শরীরও হলুদ হয়ে যেতে পারে। জন্ডিসের কারনে মৃত্যু হয় কিনা তা নির্ভর করে জন্ডিসের ভয়াবহতার উপর। এই ভয়ানক প্রচলিত রোগের কারণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে আজ আপনাদের জানানো হলো।
জন্ডিসের মাত্রা অনুসারে ইহা সাধারণত ৩ প্রকার।
১. প্রিহেপাটিক
২. হেপাটিক
৩. পোস্ট হেপাটিক
জন্ডিসে অধিকাংশ ক্ষেত্রে লিভার আক্রান্ত হয়। সুতরাং জন্ডিসকে কখনোই হেলাফেলা করা উচিত নয়।
জন্ডিসের কারণঃ
রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিস দেখা দেয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যেসব কারণ জানা গেছে তা জেনে নিই।
১.লিভার প্রদাহঃ লিভার প্রদাহে বিলিরুবিনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জন্ডিস সৃষ্টি হয়।
২.পিত্তনালীর প্রদাহঃ পিত্তনালীর প্রদাহে বিলিরুবিন শোষণ ব্যাহত হয়। ফলে বিলিরুবিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৩.পিত্তনালীর ব্লকঃ পিত্তনালীতে ব্লক হলে লিভার বিলিরুবিন সরাতে ব্যর্থ হয়। বেড়ে যায় জন্ডিসের সম্ভাবনা।
৪.গিলবার্ট’স সিন্ড্রোমঃ এই অবস্থায় এনজাইমের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এরফলে পিত্তের রেচনতন্ত্রে সমস্যা হয় এবং বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়।
৫.ডুবিন –জনসন সিন্ড্রোমঃ এই বংশগত রোগে লিভার থেকে বিলিরুবিন শোষণ হতে বাঁধা দেয়। ফলশ্রুতিতে জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
জন্ডিস প্রতিরোধের উপায়ঃ
চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে ঠিক কি কারণে জন্ডিস হলো তাঁর উপর। তবে জন্ডিস থেকে বেঁচে থাকতে আমাদের কিছু করণীয় আছে। জন্ডিস প্রতিরোধে সে সম্পর্ক জেনে নেওয়া ভালো।
১.মদ্য পান থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন হলে দিনে এক পেগ গ্রহণ করতে পারেন।
২.ওষুধ গ্রহনের সময় তরল ড্রাগস নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এইসময় মদ একদম বাদ দিতে হবে।
৩. কল কারখানার রাসায়নিক পদার্থ থেকে দূরে থাকুন।
৪. নেশাদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৫.ব্যবহারকৃত ইনেকশন কিংবা নাক – কান ফোঁড়ানোর সুই ব্যবহার করবেন না।
৬. নিরাপদ যৌনমিলন করুন।
৭. হেপাটাইটিস এ এবং বি হওয়ার আশংকা মুক্ত থাকতে হেপাটাইটিস এ এবং বি এর ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
জন্ডিস অনেক ক্ষেত্রেই মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ থার্ডএইজ