দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে পানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। যে কারণে পানবরজ ধ্বংসের আশংকা করা হচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতি মহাসর্বনাশ হয়ে গেছে পানচাষিদের। পানের বরজ রক্ষা করা তাদের জন্য হয়ে পড়েছে দুষ্কর। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে বিঘার পর বিঘা জমির বরজে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় হলুদ বর্ণ নিয়ে পান ঝরে পড়ছে।
এতে করে পানচাষিরা বড় ধরণের ক্ষতি আশংকা করছেন। ঝরে পড়া পানের সঙ্গে চুরমার হচ্ছে পানচাষিদের স্বপ্ন। ফলে এবার শীতে পানচাষিদের গুনতে হবে লোকসান।
এদিকে পানচাষিরা অভিযোগ করেছে, এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগ এসব বিষয়ে কোন কার্যকর পরামর্শ দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। পানচাষিদের পানের বরজ এখন গলার কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার ৩০ শতাংশ কৃষ সরাসরি পান চাষের সঙ্গে জডিড় রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ, আলমডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় শীত ও কুয়াশার কারণে পান ঝরে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে মেহেরপুরের প্রায় ২০ শতাংশ কৃষক পান চাষের সঙ্গে জড়িত। কৃষি বিভাগের হিসাবে মেহেরপুরে ৩০০ হেক্টর জমিতে এবার পান চাষ হয়েছে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় পান চাষ করে কৃষকরা প্রতিবছরই লাভের মুখ দেখে আসছিলেন। গত কয়েক বছর পচালাগা রোগে মেহেরপুরের ৬০ শতাংশ পান বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার পরও চাষিরা অনেক কষ্টে পান চাষে লেগে থাকেন। এবারও পান চাষ করে বাজারজাত শুরু করেছিলেন। কিন্তু লাভের মুখ দেখার আগেই বরজের পান ঝরতে শুরু করায় কৃষকরা হতাশ।
পানচাষিরা বলছেন, কৃষি বিভাগের দ্বারস্থ হয়ে অনেক ওষুধ ব্যবহার করেও কোনো ফল মিলছে না। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শে শৈত্যপ্রবাহ থেকে পান রক্ষায় বরজে ডাইথেম এম-৪৫, ইন্ডোফিল এম-৪৫, রিডোমিল গোল্ড, চিলেজিং, কনফিডর ইত্যাদি বালাইনাশক ওষুধ স্প্রে করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানান অনেক কৃষক।
এমন অনেক কৃষক রয়েছেন যারা ৪০ বছর ধরে পান চাষ করছেন। কিন্তু এ বছরই পান ঝরে পড়ে তাঁর বরজ সাবাড় হয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, পান চাষের বিষয়ে কৃষি বিভাগের লোকজন কখনোই খোঁজখবর নেন না। প্রযুক্তি বিষয়ে কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ ও পান চাষে তাদের তদারকি থাকলে চাষিদের হয়তো মোটা অঙ্কের এই লোকসান গুণতে হতো না। পানচাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ও সহজ শর্তে ঋণের দাবি জানিয়েছেন।