দি ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ প্রতি সপ্তাহের মতো আজও আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্লেনের মধ্যে বিয়ের প্রস্তাব!
‘অ্যামান্ডা হলস্টেড, তুমি কি ডেরেক ওয়াকারকে বিয়ে করবে?’ কথাটা শুনেই চমকে উঠলেন তিনি। তার পরই ভাবলেন, নিশ্চয় প্লেনের কোনা এয়ারহোস্টেসকে কথাগুলো বলছেন পাইলট। তবে কেন জানি মনে হচ্ছিল গলাটা চেনা, ডেরেকের ছোট ভাই জাস্টিনের মতো। ভয় পেয়ে ঘাড় ঘোরানোর সঙ্গে সঙ্গে দারুণভাবে চমকে গেলেন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামান্ডা- সিটের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন ডেরেক। হাতে আংটি। টেনশনে কুলকুল করে ঘাম বইছে গলা দিয়ে।
‘এমন পাগলামির কোন অর্থ হয়!’-বলেই টেনে তুললেন বয়ফ্রেন্ডকে, জড়িয়ে ধরলেন দুই হাতে। খুশিতে তখন অ্যামান্ডার চোখ বেয়ে নামছে জল।
দুই বছর পেরোল বিয়ের। তারা থাকেন নিউ ইয়র্কে। একটি ডিজাইন ফার্মে কাজ করেন অ্যামান্ডা। ডেরেক এখনও পড়ছেন, শেষ করবেন গ্র্যাজুয়েশন। এই সুখী দম্পতির বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পুরো ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ডেরেকের মা, অবশ্যই ভাবি পুত্রবধূর অজান্তে। বিয়ে হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছেন ইউটিউবে। দুই লাখেরও বেশি দর্শক পছন্দ করায় এখন রীতিমতো তারকা বনে গেছেন ডেরেক। কারণ বান্ধবিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে তিনি ব্যবহার করেছেন যাত্রীবাহী প্লেন।
পড়তেন একসঙ্গেই। বন্ধুত্বটাও চমৎকার। তবে মনোযোগটা ডেরেকেরই বেশি। এমন দারুণ একটা মেয়েকে জীবনসঙ্গী করার স্বপ্নটা খুব বেশি পোড়াচ্ছিল তাকে। চাইছিলেন এমনভাবে অ্যামান্ডাকে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবটা দেওয়া যায়, যাতে সে পুরোপুরি চমকে যায় এবং বুঝতে পারে ভালবাসার গভীরতা।
বুদ্ধিটা দিয়েছিলেন মা, ‘বিমানের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ব্যবহার করতে পারো তুমি।’ খাসা আইডিয়া পেয়েছি- ভেবে ডেরেক যোগাযোগ করলেন ডেল্টা এয়ারলাইনসের সঙ্গে। প্রতিষ্ঠানটি জানাল, এ ব্যাপারে তাদের কোন বিধিনিষেধ নেই। তবে বিমানের ক্রুরা আপত্তি না করলেই হল। ডেরেক ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ছুটিতে সবাইকে উটাহ থেকে অ্যারিজোনায় নিয়ে যাওয়ার জোগাড়যন্ত্রে। আর প্লেনে চড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজে নেমে পড়লেন পরিবারের অন্যরা। মা অনুমতি নিলেন পাইলটের। জাস্টিন ভাইয়ের হয়ে অনুমতি আনল পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ব্যবহারের।
এমন পাগলাটে প্রেমিককে হারানোটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হয়নি অ্যামান্ডার। প্লেন থেকে নেমেই বিয়ে করেছিলেন ডেরেক আর অ্যামান্ডা ওয়াকার।
নিলামে বিশ্বের বৃহত্তম দূরবীন
সম্প্রতি লন্ডনের একটি নিলাম প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম দূরবীনটির বিক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ১৯৪০ সালে নির্মিত এ দূরবীনটি প্রায় দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। আট ফুট দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট দূরবীনটি তৈরির সময় এর মূল্য নির্ধারিত হয়েছিল মাত্র ৩৬ হাজার টাকা। লন্ডনের ইস্ট সাসেক্সে নির্মিত বৃহৎ আকৃতির এ দূরবীনটির একটি মজার বৈশিষ্ট্য হল সাধারণ দূরবীক্ষণ যন্ত্রগুলোর মতো নক্ষত্রপুঞ্জ দেখার জন্য এটি তৈরি করা হয়নি। গভীর সমুদ্রে জাহাজের গতিবিধি দেখার জন্য বিশেষ এ যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছিল। দামি কাঠ ব্যবহার করে ব্রাইটনের অ্যালবার্ট ল্যামবোর্ন লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানে এটির বাহ্যিক অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল। পরে কাঠামোটিতে যন্ত্রাংশ স্থাপনের কাজ করেছে উইলিয়াম প্যাসি নামক লন্ডনের অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
দশ বছর বয়সে দশ ভাষা
মেয়েটি জন্মেছিল তাইওয়ানে। আর সবার মতো তার মা-বাবার মনেও একটাই বাসনা- সন্তান যেন লেখাপড়ায় হয় সবার সেরা। তবে কেবল আশা করেই বসে থাকেননি তারা। মেয়ের আরও ভালো পড়াশোনার জন্য অভিবাসনের মাধ্যমে চলে এসেছেন ইংল্যান্ডে।
ইংল্যান্ডে এসে ম্যানচেস্টারের গ্রিনব্যাংক প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হয় সোনিয়া। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার অবসরে সোনিয়া ইয়াং শিখতে শুরু করে নানা ভাষা। ভাষা শিক্ষা কোর্সের মাধ্যমে শিখেছে চীনা, জাপানি ও ইংরেজি।
গেল বছরের শেষ দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয় এক প্রতিযোগিতার। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় পাঁচ হাজার খুদে শিক্ষার্থী অংশ নেয় এ প্রতিযোগিতায়। ভাষা চেনা ও বলা নিয়ে আয়োজিত প্রতিযোগিতাটিতে তাদেরই অংশ হণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, যারা বেশ কয়েকটি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেছে। নিজের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য এমন একটি সুযোগের অপেক্ষায়ই যেন ছিল সোনিয়া। কোয়ালিফাইং রাউন্ডের জন্য মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সে আয়ত্তে নিয়ে আসে লুগান্ডান ভাষা। একইভাবে আয়ত্ত করে কাজাখ ও পর্তুগিজ। তবে উগান্ডার সরকারি ভাষা লুগান্ডান যে এত তাড়াতাড়ি কেও আয়ত্ত করতে পারে, ভাবতেই পারেনি আয়োজকরা। সোনিয়ার কাছে অবশ্য এটা কোন ব্যাপারই ছিল না, ‘লুগান্ডান শিখতে আমার কোন সমস্যাই হয়নি, কারণ লুগান্ডান অনেক শব্দই তাইওয়ানিজের মতো।’ অবিশ্বাস্য মেধার কারণে সোনিয়া ইয়াং এখন রীতিমতো তারকা। ওর মা-বাবাও মেয়ের এমন সাফল্যে বেজায় খুশি, ‘আমরা জানতাম ও পারবে। ওর প্রতিভা ভালো দেখেই উচ্চশিক্ষিত করে তুলতে সব কিছু বিক্রি করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছি।’ ১০টি ভাষা জানলেও সোনিয়ার প্রিয় ইংরেজি। কারণ ভাষাটি সবাই বোঝে।
এক বামন পার্কের কাহিনী
কিছুদিন আগেও পথেঘাটে হাঁটতে গিয়ে কুঁকড়ে যেতেন লজ্জায়। কান লাল হয়ে যেত শিশুকিশোরদের ঠাট্টা শুনে। বেশি সাহসীরা আবার এককাঠি সরেস, চাটি মেরে যেত মাথায়। অবহেলা আর গঞ্জনার শিকার হতেন এমনকি বন্ধুদের কাছেও। তবে এখন তাদের মুখে হাসি- হাতে কাজ অনেক। নেচে-গেয়ে আনন্দ দেন দর্শনার্থীদের। রূপকথার গল্প বলে মুগ্ধ করেন শিশুদের। পরিবেশন করেন নানা শারীরিক কসরত। দর্শকদের হাততালির সঙ্গে সঙ্গে খুশিতে ভাসেন নিজেরাও।
ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রি আর আবাসন ব্যবসার বদৌলতে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন চেন মিংজিং। টাকা-পয়সা তো অনেক হল, এবার প্রয়োজন ভালো কিছু করা- ভাবনাটি থেকেই চীনের ৪৪ বছর বয়সী এই কোটিপতি ব্যবসায়ী সিদ্ধান্ত নিলেন, বানাবেন থিম পার্ক, যেখানে মানুষ কেবল আনন্দ করবে। তবে পার্কের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে বামনদের চাকরি দেওয়ার কথা মাথায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তুখোড় ব্যবসাবুদ্ধির জন্য মনে মনে পিঠ চাপড়ে দিলেন নিজেরই।
থিম পার্কটি যেন আলাদা এক জগৎ। বসবাস করছেন মোট ১০০ জন কর্মী। নিজেরাই চালাচ্ছেন পার্কের রাইডগুলো। তবে চাকরি নিয়ে এখানে বসবাসের জন্য বামনদের পালন করতে হচ্ছে নানা নিয়মকানুন। সবচেয়ে কঠিন নিয়ম- এখানে থাকতে পারবেন না ৪ ফুট ৩ ইঞ্চির বেশি কোন মানুষ। পার্কের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী এবং অগ্নিনির্বাপক দলের কর্মীরাও তাই ছোটখাটো। তবে তারা আছেন বেশ আরামেই। সবার জন্যই রয়েছ আলাদা রুম। সপ্তাহে বেতন পান ৮০০ থেকে হাজার ইউয়ান (৯ থেকে ২০ হাজার টাকা), ডিউটি শেষে পার্কের উন্নয়নে করেন নানা কাজ।
কুনমিং প্রদেশে ২০০৯ সালের মে মাসে চালু হয় পার্কটি। তৈরি করতে চেনের খরচ হয়েছ ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান। তিন ভাগে বিভক্ত পার্কটি- বামন রাজ্য, প্রজাপতি পার্ক ও মহাশূন্য। বামন রাজ্যে দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখতে পারেন পার্ককর্মীদের প্রতিদিনের জীবন। শিশুরা হইচই করে বেড়ায় প্রজাপতি পার্কে। আর পৃথিবীর বাইরের জগৎটা কত আজব ও মজার, সেটাই দেখানো হয়েছে মহাশূন্যে। তবে বামনদের থিম পার্ক এটিই প্রথম নয়। ১৯০০ সালের শুরুতে নিউ ইয়র্ক শহরের কোনি দ্বীপে ‘লিলিপুটিয়া’ নামে বানানো হয়েছিল বামনদের থিম পার্ক। মাত্র এক দশক পরই আগুনে পুড়ে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে লিলিপুটিয়া।