দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে। এজন্য চট্টগ্রাম আদালত ভবন, কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সংলগ্ন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় অস্ত্র আইন ও চোরাচালান আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। আজ দুটি মামলারই রায় ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে এই মামলার অন্যতম আসামী তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নেওয়া হয়েছে।
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায়কে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আদালত ভবন প্রাঙ্গণ পর্যন্ত পুরো এলাকায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সময় এসবি, ডিবি ও আদালত পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া এসবির সুইপিং টিম, ডিবির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম, ক্যামেরা ইউনিটসহ সব মিলিয়ে ৩ শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে।
অস্ত্র আইনের মামলায় ৫০ জন ও চোরাচালানের ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামি ৫২ জন, যার মধ্যে ৫০ জনই উভয় মামলার আসামি। অধিকতর তদন্ত শেষে সম্পূরক অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত চোরাচালানের মামলার ৫২ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ১১ জন। ২৯ জন জামিনে থাকলেও পলাতক রয়েছেন ১২ জন।
অস্ত্র মামলার ৫০ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার ১০, জামিনে আছে ২৮ জন। এই মামলায়ও পলাতক রয়েছে ১২ জন।
মামলার অভিযোগপত্রের ক্রমানুসারে আসামিরা হলেন- চোরাকারবারী হাফিজুর রহমান, চোরাকারবারী দীন মোহাম্মদ, ট্রলার ভাড়াকারী হাজী মো. আব্দুস সোবহান, দিলদার হোসেন চৌধুরী, সানোয়ার হোসেন চৌধুরী, মরিয়ম বেগম মেম্বার ওরফে বদনী, আব্দুল আজিজ, জসীম উদ্দিন, মো. আকতার, মো. জাহাঙ্গীর, নুরুল আবছার ওরফে আবছার মেম্বার, শ্রমিক সরবরাহকারী আরজু মিয়া রওফে আরজু পাগলা, মজিবুর রহমান ভুলু, এজাহার মিয়া, শেখ মোহাম্মদ, ফজল আহাম্মদ চৌধুরী, মো. আকবর আলী, বাদশা মিয়া, ওসমান মিস্ত্রী, আব্দুল মান্নান, কবির আহাম্মদ, মো. রফিক, মঞ্জুরুল আলম, মনির আহাম্মদ, আব্দুল খালেক, প্রদীপ কুমার দাশ, নুর নবী, বাবুল মিয়া, সালেহ জহুর, আব্দুর রহিম মাঝি, মো. শাহজাহান, আব্দুস সোবহান, আব্দুছ সবুর, শাহ আলম, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, ফিরোজ আহাম্মদ, সাইফুদ্দিন, কামাল মিয়া, এনএসআইয়ের সাবেক ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন, এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) উইং কামান্ডার (অব.) সাহাবুদ্দিন, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (অব.) আব্দুর রহিম, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের সাবেক উপ-পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, সিইউএফএলের সাবেক এমডি মহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএলের সাবেক জিএম (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উলফার সামরিক কমাণ্ডার পরেশ বড়ুয়া, সাবেক অতিরিক্ত শিল্প সচিব নুরুল আমিন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সফিকুর রহমান ও আবুল হোসেন।
উভয় মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ১১ জন আসামি। এরা হলো- মতিউর রহমান নিজামী, লুৎফুজ্জামান বাবর, রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, আবদুর রহিম, শাহাবুদ্দিন, লিয়াকত হোসেন, মহসিন উদ্দিন তালুকদার, আকবর হোসেন খান, কেএম এনামুল হক, হাফিজুর রহমান ও দীন মোহাম্মদ।
১২ পলাতক আসামিরা হলো- নুরুল আমিন, পরেশ বড়ুয়া, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, আবদুর রহিম মাঝি, মোহাম্মদ সবুর, মোহাম্মদ শাজাহান, শাহ আলম, হাজী সোবহান, প্রদীপ কুমার দাশ, বাবুল মিয়া ও নুর নবী।
সাক্ষ্য-জেরা শেষ হওয়ার পর গত ১৩ জানুয়ারি আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজ বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন। ঘটনার ১০ বছর পর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় শোনার জন্য সাধারণ মানুষ অধীর অপেক্ষায় আছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) জেটি ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ।