ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। এই কথাটির সঙ্গে বাস্তবতার মিল রয়েছে আমরা জানি। কিন্তু এই গ্রাম-বাংলায় কতযে সমস্যা রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আমরা চেষ্টা করবো প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক দিন গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরতে।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই
বগুড়ার কাহালু উপজেলার সেমাই পল্লী হিসেবে খ্যাত শেকাহার ও অন্তাহার নামক বাজার এলাকায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লোভনীয় আর মন মাতানো লাচ্ছা সেমাই। ঈদকে সামনে রেখে রোজার শুরু থেকেই ওই এলাকার প্রায় অর্ধশত সেমাই কারখানা সচল হয়ে ওঠে। বর্তমানে কারখানাগুলোতে করিগর ও শ্রমিকরা দিন-রাত সেমাই তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রতিটি কারখানায় ২০/২৫ বস্তা ময়দার সেমাই তৈরি হয়ে থাকে। আর এ সেমাই তৈরির কারখানাগুলো রয়েছে কাহালু উপজেলার শেকাহার, ভোলতা, পাঁচপীর ও অন্তারপুকুর নামক গ্রাম এলাকায়। প্রতিদিন ১৫/২০ ট্রাক সেমাই বগুড়া থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে।
জানা যায়, সেমাইয়ের প্রকারভেদে ব্যবসায়ীরা এখান থেকে এ সেমাই ৮০ টাকা থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে তারা তাদের এলাকায় অতি উচ্চমূল্যে বিক্রি করে থাকেন। এমন কি অভিজাত হোটেলসমূহ সেমাইগুলো আকর্ষণীয় প্যাকেটে তুলে সেগুলোতে আরোও অধিক দামে বিক্রি করছে। তবে লাচ্ছা সেমাই ঘি ডালডা অথবা সোয়াবিন তেলে ভাজা হয়ে থাকে বলে প্রচার করা হলেও প্রকৃতপক্ষে পামওয়েল তেল দিয়ে ভাজা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র আটার কাই তৈরির সময় সামান্য কিছু ডালডা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেমাই তৈরির স্থানীয়ভাবে ক’জনের অনুমতি রয়েছে এ সম্পর্কে উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের আব্দুস সালামের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, জেলা সিভিল সার্জন কর্তৃক ৩৩ জন সেমাই ব্যবসায়ীকে লাচ্ছা সেমাই তৈরির অনুমতি দেয়া হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি হচ্ছে এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন এগুলো দেখার জন্য এলাকায় যাচ্ছি। তিনি বলেন, সেমাই তৈরির কারিগরদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি আরোও জানান, এখানকার তৈরি লাচ্ছা সেমাইয়ে কোন ক্ষতিকার রং ব্যবহার করা হচ্ছে না।
গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ ॥ ৩৫ চাষির ভাগ্য বদলে গেছে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কুল্লাপাড়া ও রঘুনাথপুর গ্রামের চাষিরা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে ভাগ্য বদল করেছে। লাভজনক হওয়ায় চাষিরা গ্রীষ্মকালীন টমোটা চাষে ঝুঁকছে। প্রতিবছর টমেটো চাষের জমির পরিমাণ বাড়ছে। রঘুনাথপুর ও কুল্লাপাড়া পাশাপাশি দুটি গ্রাম। মাঠে গেলে পলিথিনের ছাউনীর নিচে টমেটো ক্ষেত নজরে পড়ে। কুল্লাপাড়া গ্রামের পরিতোষ কুমার মণ্ডল জানান, ৭ বছর আগে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেন। এবার ১৪ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করেছেন। এতে তার ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আষাঢ় মাস থেকে টমেটো উঠতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে পাইকারি প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এখন অন্য চাষিদের টমেটো বাজার উঠায় সরবরাহ বেড়ে গেছে, দামও কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রঘুনাথপুর গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম চাঁদ এবার ৮ কাঠা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। তিনি দু’ বছর ধরে টমেটো চাষ করছেন। অন্য ফসল থেকে টমেটো চাষ অনেক বেশি লাভজনক। তার জমিতে ২ হাজার গাছ আছে। প্রতিটি গাছ টমেটোতে ভরে গেছে। গড়ে প্রতি গাছে ২ কেজি করে টমেটো ধরেছে। রঘুনাথপুর ও কুল্লাপাড়া গ্রামে এবার প্রায় ২০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে। এ দুটি গ্রামে ৩৫ জন চাষি গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। তারা সকলে বারি টমেটোর চাষ করছেন। বারি- ৪ জাতের টমেটোর ফসল ভাল হয় বলে সাইফুল ইসলাম জানান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স দু’বছর অচল!
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্সটি গত দু’বছর যাবৎ অচল হয়ে পড়ে থাকায় এবং নতুন কোন এ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ না করায় জরুরি চিকিৎসার জন্য সংকটাপন্ন রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রকাশ, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে দেড়শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এদের মধ্যে গর্ভবতী মাতা ও সংকটাপন্ন রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য একটি এ্যাম্বুলেন্স অভাবে জেলা সদর হাসপাতাল বা নিকটবর্তী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সময়মত স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। ফলে মুমূর্ষু রোগীদের নসিমন-করিমন যোগে অন্যত্র পাঠাতে গিয়ে তাদের অবস্থা আরো কাহিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নামে একটি নতুন এ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ করা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন থেকে ভুক্তভোগী শালিখাবাসী একটি নতুন এ্যাম্বুলেন্সের দাবিতে জনপ্রতিনিধিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও শুধু আশ্বাস প্রদান করা ছাড়া নতুন কোন এ্যাম্বুলেন্স আসেনি। প্রায় এক বছর পূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শ্রী বীরেন শিকদার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একটি ডিও লেটার প্রদান করেন। কিন্তু প্রত্যাশিত এ্যাম্বুলেন্সটি আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মুনশী মোঃ ছাদুল্লাহ জানান, ‘এখানে যোগদানের পর থেকে দেখে আসছি একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন যাবৎ অচল অবস্থায় পড়ে আছে। একটি এ্যাম্বুলেন্স অভাবে মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতাল বা নিকটবর্তী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রোগী প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এব্যাপারে আমি নতুন একটি এ্যাম্বুলেন্সের জন্য মাগুরা জেলা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন পাঠিয়েছি।