ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় ছিল যখন মুরগী অনেকগুলো ডিম পেটের নিচে নিয়ে বাচ্চা ফুটাতো। ডিম থেকে মুরগীর মাধ্যমে বাচ্চা ফুটানোর সেই দিন এখন আর নেই বললেই চলে। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে ইনকিবিউটরের দ্বারা বাচ্চা ফুটানো হয়।
আগের আমলের সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো পদ্ধতি কত কঠিন ছিল। সব মুরগীই ডিম দিতো কিন্তু সব মুরগীই আবার বাচ্চা ফুটানোর জন্য ‘কুচ্চা’ হতো না। যে সব মুরগী ডিম পাড়া শেষ হলে ‘কুচ্চা’ হতো শুধুমাত্র সেই সব মুরগীকে একটি খোলার মধ্যে অর্থাৎ একটি মাটির পাত্রে বসিয়ে ‘তা’ দেওয়ানো হতো। এভাবে ২১ দিন মুরগী ওই পাত্রে ডিমের উপর বসে থাকতো। দিনে হয়তো একবার খুব কম সময়ের জন্য খাওয়ার জন্য মুরগী বের হতো। তাছাড়া সারাদিন রাত এক নাগাড়ে ওই ডিমের উপর বসেই তা দিতো। এভাবে ২১ দিন পেরোবার পর ডিম থেকে বাচ্চা ফুটা শুরু হতো। একটি মুরগীর পেটের নিচে অন্তত ১২ বা ১৫ টি ডিম দেওয়া যেতো। ২১ দিন পর আস্তে আস্তে বাচ্চা ফোটা শুরু হলে কি মজায় না লাগতো! ডিমের মধ্যে থেকে একটা একটা করে ছোট ছোট বাচ্চা বের হওয়া শুরু হলে সে এক কি দৃশ্য! ডিম একটু করে ফাটতে থাকে আর বাচ্চা বের হতে থাকে। হয়তো দুএকটি ডিম নষ্ট হতো। বেশির ভাগ ডিম হতেই এভাবে বাচ্চা বের হয়ে আসতো। আর এখন আধুনিক পদ্ধতিতে ইনকিবিউটরের মাধ্যমে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো হয়ে থাকে। আবার কখনও বা তুষ পদ্ধতিতে হাঁস ও মুরগীর বাচ্চা ফুটানো হয়ে থাকে।
এরপর মুরগীটি ওই বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে থাকতো সবসময়। কখনও বিড়াল কিংবা কুকুর আক্রমণ করলে তা প্রতিহত করতো বাচ্চা গুলোর মা মুরগী। কোন খাওয়ার পেলে নিজে না খেয়ে বাচ্চাগুলোকে খেতে দিতো এমন দৃশ্যও আমরা ছোট বেলায় অনেক দেখেছি। সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। এখন দেশি মুরগী অনেক কমে গেছে। বিদেশী ব্রয়লার মুরগীর বদৌলতে মানুষ এখন ব্রয়লার মুরগী নিয়েই ব্যস্ত।
কিন্তু সেই অভাবনীয় দৃশ্য দেখলে কি সেই আগেকার আমলের কথা মনে পড়ে না? যখন মানুষের মধ্যে মানুষের মমোত্ববোধ ছিল অনেক বেশি। মানুষের প্রতি মানুষের কোন হিংসা বিদ্বেষ ছিলনা বললেই চলে। ছিল না লোভ-লালসা। অথচ এখন কে কখন কাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারে সে লড়াই এ ব্যস্ত। এখন বাবা ছেলেকে খুন করছে, ছেলে বাবাকে খুন করতেও পিছপা হচ্ছে না। নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্য মানুষকে কেটে টুকরো টুকরো করে নির্মমভাবে হত্যা করতে এখন আর কারো হাত মনে হয় কাঁপে না! কিন্তু এইটি কি আমাদের কাম্য হতে পারে? একবার আসুন না আমরা সবাই নিজেদের শুধরাই। সেই আগেকার আমলের মতো ভালো হয়ে যায়। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি। নিজের স্বার্থকে বড় করে না দেখে পরের স্বার্থকেই বেশি গুরুত্ব দেই। আসুন আমরা সবাই মিলে মানুষের কল্যাণে কাজ করি।