ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পদ্মা সেতু বিষয়টি আবারও উঠে এসেছে। পদ্মা সেতু সম্পর্কিত ঋণ চুক্তি পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের মান ভাঙাতে সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। পুনর্বিবেচনার আবেদনের পদ্ধতিও সরকার অবহিত হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হবে। এখন চলছে সেই আবেদনের খসড়া তৈরির প্রস্তুতি।
জানা যায়, বহুল আলোচিত এ পদ্মা সেতুর টেন্ডার আহ্বান ও সম্পদ সংগ্রহের দায়িত্ব সরকারের হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে দাতা সংস্থাগুলোর এ ভূমিকায় চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু নিয়ে বেহাল দশা কাটাতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও চলছে। মন্ত্রী হিসেবে আবুল হোসেনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করায় আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আরেকটি পদত্যাগের বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। একটি অনলাইন বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে। আর এটাও করা হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনেই। তবে ড. মশিউর রহমান একটি দৈনিককে জানান, তাকে পদত্যাগের বিষয়ে কেও কিছু বলেননি। আর এসব বিষয় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে না। সূত্র জানায়, মন্ত্রী পদমর্যাদার একাধিক ব্যক্তিকে ছুটিতে পাঠানোর পক্ষে বিশ্বব্যাংক। কিন্তু এদের নাম স্পষ্ট করে বিশ্বব্যাংক বা সরকার কেও বলছে না। তবে এ ঋণ পেতে মরিয়া সরকার বিশ্বব্যাংকের সব শর্তই মেনে নেয়ার পক্ষে। প্রথম শর্ত আবুল হোসেনের মন্ত্রিসভা থেকে সরে যাওয়া। দ্বিতীয় শর্তটি হচ্ছে মন্ত্রী পদমর্যাদার একাধিক ব্যক্তির সরে যাওয়া অথবা ছুটিতে পাঠানো। আর তৃতীয় শর্ত দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের একটি প্যানেলের প্রবেশাধিকার রেখে একটি টার্মস অব রেফারেন্স চূড়ান্ত করা। এসব শর্ত প্রতিপালনে সরকার অনেকটা এগিয়ে এসেছে। দুদকও এ বিষয়ে টার্মস অব রেফারেন্স সই করবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পদ্মা সেতু নির্মাণে ১২০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুত হয় বিশ্বব্যাংক। কিন্তু জুনে এসে এ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। অভিযোগ ওঠে সেতু নির্মাণের জন্য কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে অবৈধ অর্থ লেনদেনের প্রস্তাব রয়েছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুটি নির্মাণে ২৯০ কোটি ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। তার মধ্যে ১২০ কোটি ডলার বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছাড়াও এডিবি ৬১ কোটি, জাইকা ৪০ কোটি এবং ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতুতে অন্য দুই সহ-অর্থায়ন সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি তাদের প্রতিশ্রুত ঋণের কার্যকারিতার সময় ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মধ্যে এ বিষয়ে সম্মানজনক নিষ্পত্তি চায় সরকার। শেষ পর্যন্ত একটি সমাধানও হবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারনা।