দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষ মালয়েশিয়ান নিখোঁজ বিমান ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০ সম্পর্কে মালয়েশিয়ান বিমান নিখোঁজের তদন্তে গঠিত তদন্ত দল জানিয়েছে, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার সকল আলামত দেখে তারা সিদ্ধান্তে এসেছেন বিমানটি কে বা কারা ছিনতাই করে অন্যত্র নিয়ে গেছে।
বিমান নিখোঁজ সম্পর্কিত সর্বশেষ আপডেটঃ
- মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন নিখোঁজ বিমানটি ছিনতাই এর শিকার।
- কিছু বিমান বিশেষজ্ঞ নিশ্চিত হয়েছেন বিমানটিকে আকাশে উড়ার এক ঘন্টার মাঝেই এর নির্ধারিত রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
- মার্কিন তদন্ত সংস্থা বলছে বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পরেও আকাশে চার ঘন্টা উড়েছে।
- যুক্তরাষ্ট্র এবং মালয়েশিয়ার তদন্তে দেখা গেছে বিমানটি ভারতীয় উপমহাদেশের জল বা স্থল সীমানার ভেতরেই আছে।
- বিমান নিখোঁজের বেশ কয়েক ঘণ্টা পরেও নিখোঁজ যাত্রীদের মুঠো ফোন সচল ছিল!
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে তদন্ত দলের বরাত দিয়ে বলা হয়, যেহেতু মালয়েশিয়ান রাডারে ফ্লাইট এফএইচ৩৭০ আকাশে উড়ার এক ঘন্টার মাঝেই যোগাযোগ হারিয়ে যায়, এবং মার্কিন তদন্তে দেখা যাচ্ছে বিমানটি হারিয়ে যাওয়ার পরেও আরো ৪ ঘন্টা আকাশে ছিল ফলে কে বা কারা একে ঐ সময়ে রাডার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আকাশে উড়তে বাধ্য করেছিল এই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায়। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, উড়ার পর থেকে সব মিলিয়ে পাঁচ ঘণ্টা আকাশে ছিল বিমানটি। এ সময়ের মধ্যে এর অন্তত ২২০০ নটিক্যাল মাইল উড়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে শুধু মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলের মালাক্কা প্রণালি বা আন্দামান সাগর নয়, পাড়ি দেওয়ার কথা পাকিস্তান বা মঙ্গোলিয়া পর্যন্ত। এই বিষয়কে মাথায় রেখেই তদন্ত পেয়েছে নতুন মাত্রা।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, হয়তো পাইলট বা কো-পাইলটের মধ্যেই কেউ বিমানের সংকেত পাঠানোর প্রযুক্তি বন্ধ করে দেন বা দিতে বাধ্য হন। এরপর থেকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার আর যোগাযোগ করতে পারেননি। সেই সুযোগে হয়তো গোপন জায়গায় বিমানটি নামিয়ে দিয়েছেন চালক।
এদিকে মালয়েশিয়ান তদন্ত দল অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বিমানটি ছিনতাই হয়েছে তবে এই মুহূর্তে ঠিক কোথায় বিমানটি আছে বা একে কোথায় নামিয়ে আনা হয়েছে তার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তদন্ত দল।
উল্লেখ্য বিমানে যথেষ্ট পরিমান জ্বালানি তেল ছিল যা দিয়ে বিমানটি আকাশে প্রায় ৫ ঘণ্টা উড়তে পারতো। আর এই সময়ে বিমানটি দক্ষিণ চীন সাগর পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কোন অঞ্চলে এসে থাকতে পারে।
এদিকে আরেক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, বিমানটি মালয়েশিয়ার মালয় উপদ্বীপের ওপর দিয়ে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের দিকে গেছে। বিমানটি উত্তর-দক্ষিণে না গিয়ে পশ্চিমে মোড় নিয়েছে। ইচ্ছা করে ফ্লাইটের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়, এটা কেউ জানত এবং পাইলট বাধ্য হয়েই বিমানের পথ পরিবর্তন করেছেন। তবে নিখোঁজ হওয়ার পরে বিমানের ককপিটে থাকা ব্যক্তিদের মাঝে সবাই বিমান চালনার বিষয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন এটা বলাই যায়। কারণ বিমান সম্পূর্ণ রাডারের সহায়তা ছাড়া ৪ ঘন্টা আকাশে উড়ে বেড়িয়েছে যা সাধারণ ভাবে কঠিন বলা চলে। নিখোঁজ বিমানের তদন্তে এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে তদন্ত যেহেতু বলছে বিমান ছিনতাই হয়েছে, এই বিমান ছিনতাইয়ের পেছনে কাদের হাত রয়েছে তার বিষয়ে এখন বিভিন্ন আলোচনা চলছে। এক্ষেত্রে উইঘুর সন্ত্রাসীদের হাত থাকতে পারে বলে চীন মনে করছে। উল্লেখ্য জিনজিয়ান অঞ্চলের মুসলিম সন্ত্রাসী গোষ্ঠী উইঘুরদের নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেয় দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান!
মালয়েশিয়ান নিখোঁজ বিমান বিষয়ে আরও খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সূত্রঃ ইয়াহুনিউজ, এবিসি, গ্লোবাল নিউজ, রয়টার্স