দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুই মাস বয়সী শিশু অদ্ভুতভাবে বেঁচে গেলো ঘরে দরিদ্র বাবা-মার তৈরি ইনকিউবেটরে। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই ঘটেছে।
মুম্বাইয়ের Alliance Hospital এ ৩৪ বছর বয়স্ক অরুণা চৌহান গত বছরের অক্টোবরে মিথিলেশ নামের একজন পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের দুই মাস বাকি থাকতেই সে ভূমিষ্ঠ হয়ে যাওয়ায় শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে বাবা-মা সহ ডাক্তারদেরও বেশ ঘাম ঝরাতে হয়। ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে Thermocol icebox রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু অরুণা ও রমেশ দম্পতির আর্থিক অবস্থা এই ইনকিউবেটরে রেখে লাইফ সাপোর্ট দেয়ার মতো ছিলো না। কারণ কমপক্ষে তাকে আরো কয়েক মাস এই ইনকিউবেটরে রাখতে হবে।
যেহেতু শিশু মিথিলেশকে নিয়ে তাদের হাসপাতাল ছাড়তে হবে তাই মিথিলেশের বাবা রমেশ চৌহান ডাক্তারকে ইনকিউবেটরের বিকল্প ব্যবস্থার পরামর্শ দিতে অনুরোধ জানান। ASIA PRESS সংবাদপত্রের এক সাক্ষাতকারে অরুণা চৌহান জানান, “যেহেতু আমরা হাসপাতালের খরচ সামলাতে পারছিলাম না এবং প্রতিদিন সেখানে খরচ আসে $130 তাই ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন Thermocol icebox কিনে নিতে যেখানে আলোবাতাস চলাচল করতে পারে এবং ৬০ ওয়াটের একটা ভালব্ লাগিয়ে নিতে যাতে বক্সটায় আরামদায়ক উষ্ণতা বজায় থাকে। তখন আমার স্বামী মাছের বাজার থেকে একটা মাছ রাখার বাক্স কিনে আনেন। এতে আর কিছু না হোক অন্তত আমরা আমাদের সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাটা করতে পারবো।”
২০ দিন হাসপাতালের আইসিইউ (ICU) তে থাকার পর এই দম্পতি তাদের সন্তান মিথিলেশকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। মিথিলেশের মা বলেন, “ইনকিউবেটরের বিকল্প এটা ছাড়া আমরাও আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না। এটা ছিলো আমাদের জন্য একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেহেতু এর আগে আমরা এমন অবস্থার সম্মুখে পড়ি নি। আমরা কিছুতেই চাচ্ছিলাম না আমাদের সন্তানকে হারাতে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর মিথিলেশকে বাক্স থেকে বের করে ওর গায়ের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতাম, বোঝার চেষ্টা করতাম ও সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছে কিনা।”
এভাবে মিথিলেশকে পাঁচ মাস পর্যন্ত ঘরে তৈরি এই ইনকিউবেটর বাক্সে রাখতে হয়েছে। মিথিলেশ এখনো তার বয়স অনুপাতে কম ওজনের। এর আগে Wadia Hospital এর চিফ এক্সিকিউটিভ Dr Minnie Bhodanwal বলেন, “মিথিলেশকে শিশু বিভাগে এসে সারাক্ষণই চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষনে রাখা উচিত কিন্তু তার বাবা-মায়ের সে সামর্থ্য নেই বলে তারা সেটা পারছেন না। হয়তো কেউ তাদের অবস্থার কথা শুনলে এগিয়ে আসবেন।”
মিথিলেশ ছাড়াও এই দম্পতির আট বছর বয়সের আরো একজন সন্তান আছে। তারা জানায় তিন বছর আগে তারা গুজরাট থেকে মুম্বাইয়ে আসেন এবং এখানে এসে বুঝতে পেরেছেন এই শহরটা জীবনধারণের জন্য অনেক কঠিন এবং মানুষের হৃদয়েও মায়া-মমতা অনেক কম।
তথ্যসূত্র : FOX NEWS.COM