দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা যখনি একটি ঐতিহাসিক স্থাপনায় ভ্রমণে যাই দেখতে পাই সৌন্দর্যমন্ডিত স্থাপনা, সর্পিলাকার টাওয়ার, ভাস্কর্য কিংবা পাথরের দেয়াল। কিন্তু উজ্জ্বল ও তরঙ্গায়িত রঙের ব্যবহার হয়তো আপনি নাও দেখে থাকতে পারেন।
ইরানের নাসির-আল-মূলক মসজিদ তেমনি একটি বর্ণিল স্থাপনা। এর বর্ণিল আলোকময়তা একে অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থাপনা থেকে আকর্ষণীয় এবং ব্যতিক্রম হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে। এর কাচের জানালাই শুধুমাত্র মুল আকর্ষণ নয় বরং এর জানালাগুলোর বর্ণিলতা একে দিয়েছে বৈচিত্রময়তা।
জ্যামিতিক নকশাকৃত টাইলগুলো পুরোপুরি রঙিন এবং তরঙ্গায়িত। ১৮৭৬ সালে ইরানের সিরাজ শহরে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৮৮৮ সালে এর নির্মাণ শেষ হয়। নাসির আল মূলকের শাসনামলে খাজা রাজত্বের মীর্জা হাসান আলি এই সৌন্দর্যমন্ডিত মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মসজিদটির দাগাংকিত কাচের তৈরি জানালাগুলো সকালের আলো ধারণ করে এবং মসজিদের ফ্লোরে সেই বর্ণিল আলো খেলা করে। আলোর এই বর্ণিল খেলার জন্য একে পিঙ্ক মসজিদ বলা হয়। এই কারণেই প্রতিবছর অনেক আলোকচিত্রী এখানে আসে এই মসজিদের আলোর বর্ণিলতার ছবি তুলতে।
মসজিদটির নকশা করেন মোহাম্মদ হাসান আল মেমার এবং মোহাম্মাদ রেজা কাশি পাজ। কিছু কিছু টাইল সাজানো হয়েছে গোলাপী রঙে। তাই হঠাৎ একে দেখলে একটি গোলাপের বাগান বলে ভুল হতে পারে। মসজিদটিতে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক ইসলামী নিদর্শন।
মসজিদটির অজু করার স্থানে তৈরি ঝরনাটি আইয়ান সাম্রাজ্যের স্থাপনা নিদর্শন বহন করে। পৃথিবীতে কয়েকটি এমন বর্ণিল দাগাঙ্কিত মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মসজিদুল আকসা এবং ইস্তাম্বুলের নীল মসজিদ।
খাজার রাজবংশ ইরান শাসন করে ১৭৮৫ সাল থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত। তাদের শাসনামলে ইরানে অনেক ইসলামী স্থাপনা স্থাপিত হয়। এছাড়াও তারা ছিলেন সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষক।
সিরাজ ইরান শহরের একটি ঐতিহাসিক শহর। সিরাজকে বলা হয় কবি, মদ আর বাগানের শহর। ইরানের তথা বিশ্বের দুইজন বিখ্যাত কবি হাফিজ এবং শেখ সাদীর জন্ম এই সিরাজ শহরে। শেখ সাদীর সেই ঐতিহাসিক ঘটনার শহরও এই সিরাজ শহর।
তথ্যসূত্রঃ বোরপান্ডা ও উইকিপিডিয়া