দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের অধিকাংশ জায়গায় ভালোভাবে প্রকৃতি নিবিষ্ট। আমরা বলতে পারি সারাবিশ্বে অসংখ্য সুন্দর স্থান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সারাবিশ্ব থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই সকল সুন্দর জায়গার মধ্য থেকে পাঠকদের জন্য আলাদা করে কিছু বিশেষ জায়গার বর্ণনা তুলে ধরা সত্যি কঠিন।
লেক সুপিরিয়রের গুহা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় লেক সুপিরিয়র লেক, অ্যাপসটাইল দ্বীপকে বলা হয় সেই লেকের সব চেয়ে দর্শনীয় স্থান। বেলেপাথরের ক্লিফ, ক্লিফের মুখে সমুদ্রের ঢেউয়ে তৈরি হওয়া গুহা। এগুলো সবই আসাধারন, এই গুহাকে বলা হয় শয়তানের গুহা। মিনোসোটার জেসন নেলসার ভ্রমন করেছেন এই রকম আসাধারন কিছু জায়গায় যেখানে রয়েছে বালি দ্বীপ এবং একটি ন্যাশনাল পার্ক। তিনি একটি কায়াকে করে গত গ্রীষ্মে মনোমুগ্ধকর এই সকল স্থানের সৌন্দর্য অবলোকন করেছেন। কিন্তু নেলসন আরো বলছেন ভ্রমনার্থীদের অবশ্যই তা শীতে একবার দেখতে আসা উচিত। কারণ তখন এর গুহার অভ্যন্তরীণ চিত্র অনেকটাই বদলে যায়। তখন লেক সুপিরিয়র বরফে জমে যায় ফলে এর গুহা দেখতে বরফের উপর দিয়ে দুই মাইল হেটে আসতে হয়। এর বরফের ধারকগুলো লেকের শান্ত জলের মতোই নীরব।
ব্রাজিলের ক্রান্তীয় উপকূলের স্বর্গ
জেরিকোকোয়ারার স্ফটিকাকার নীল লেগুনের পাশে বালিয়াড়ির জলসিক্ত বালি একে এনে দিয়েছে ভূস্বর্গের অনুভুতি। জেরিকোকোয়ারা থেকে প্রায় ৩০০ কিমি দূরে একটি ছোট জেলেদের গ্রাম রয়েছে। এর হৃদয়জুড়ানো বাতাসের সাথে হারিয়ে যাওয়া ঘুড়ির উড্ডয়ন আপনাকে বিমোহিত করবে। দিগ্বিজয়ী প্যারিসের মাতাই যখন এটি জয় করেছিলেন তখন এর সৌন্দর্য দেখে একে বলেছিলেন এটি একটি সময় লীন স্থান। এর দৃশ্য, ক্রান্তীয় বনাঞ্চল, ব্রাজিলের সংস্কৃতি মিলে এখানে পাওয়া যাবে এক জাদুকরী অনুভূতি।
আকাশছোয়া ক্যাথেড্রাল
কলম্বিয়ার ইপিয়ালিস শহরে ইকুয়েডরের দক্ষিণাঞ্চলের বর্ডারে ভুমি সমতল থেকে প্রায় ১০০ মিটার উপরে গোথিক স্থাপত্য নির্মাণের একটি ক্যাথেড্রাল রয়েছে। এটি দেখলে আপনার মনে হবে এটি আকস্মিক আকাশ থেকে আন্দিজ বনের মাঝে এসে পড়েছে। ভ্রমনার্থীরা মনে করেন এটি বিশ্বের অন্যতম অপ্রত্যাশিত সৌন্দর্য। ১৮শ শতাব্দীতে ভার্জিন মেরি স্বপ্নে অদিস্ট হয়ে একজন তরুনীর এবং একজন অন্ধ মহিলার আরোগ্য করেছিলেন বলে পরবর্তীতে তারা এই ক্যাথেড্রাল নির্মাণ করেন।
সাদা পাথরের মন্দির
মিখাইল ব্যালেঞ্জার নিজেকে একজন হার্ডকোর ব্যাকপেকার বলে থাকেন। তিনি উত্তর ভারতের রণকপুর মন্দিরে ভ্রমণ করেন যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জৈন মন্দির অবস্থিত। এর বাইরের সৌন্দর্য বেশ রাজকীয় কিন্তু এর ভেতরের সৌন্দর্য দেখে আপনার মুখ হা হয়ে যাবে। কেননা এর পুরোটা সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি। মন্দিরে রয়েছে প্রায় হাজারখানিক পিলার যার সবগুলোই জ্যামেতিক নকশায় নকশাকৃত। হিন্দুদের এই পবিত্র স্থানটি উদয়পুর থেকে প্রায় ৯০ কিমি দক্ষিনে। এখানের মূল সৌন্দর্য হলো হাতি এবং সাপের ভাস্কর্য যার সবগুলোই তৈরি সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে।
মিথের তৈরি তিব্বত
সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৬৬০০ মিটার উচুতে অবস্থিত একটি রহস্যময় প্রদেশ তিব্বত। একে বলা হয় পৃথিবীর ছাদ। তিব্বতের গড় উচ্চতা প্রায় ১২০০০ মিটার। তিব্বতকে বলা হয় দেবতা আর মন্দিরের দেশ। তিব্বত হলো সিন্ধু, গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্রের মতো নদীর উৎপত্তিস্থল। তিব্বত একই সাথে বৌদ্ধ, হিন্দু এবং জৈনদের পবিত্র স্থান।
শূন্যভুমি জনমানবের হাহাকার
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শূন্যস্থান যেখানে কোন মানুষ নেই এবং সবচেয়ে বড় মরুভুমি। এই মরুভূমিটি বয়ে গিয়েছে সৌদি আরব, ইয়েমেন, ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশের উপর দিয়ে। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না এর বিশালত্ব। এখানে পথ চলতে গেলে আপনার মনে হবে কোন এক অথৈই সাগরে রয়েছেন পার্থক্য শুধু এই যে সত্যিকারের সাগরে আপনি পেতেন জল আর এখানে বালি। এই বিস্তৃত মরুভুমির মাঝে আপনি মাঝে মাঝে খুজে পাবেন কিছু উটের খামার।
পৃথিবীতে এই রকম আরো অসাধারণ স্থান রয়েছে যা প্রতিনিয়ত ভ্রমনার্থীদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। আমাদের দেশেও রয়েছে তেমনি অসাধারণ কিছু স্থান।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি