দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকার রাস্তায় ব্যবসা করা হকাররা এবার বলছেন তারা আর পুলিশ, লাইন ম্যান কিংবা চাঁদা বাজদের চাঁদা দেবেন না। তারা চান সরাকরে সরাসরি টোল বা রাজস্ব দিতে। আর এক্ষেত্রে সরাকরের বার্ষিক আয় হবে প্রায় ১’শ ৪৬ কোটি টাকা!
বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের দাবি অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীর হকাররা যদি পুলিশ, লাইন ম্যান কিংবা চাঁদা বাজদের চাঁদা না দিয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে ঐ টাকা দেয় তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ১শ ৪৬ কোটি টাকা আয় হবে। এবং জবাবে হকাররাও পাবে বৈধ উপায়ে আয়ের পথ।
হকারদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশন জোরালো ভাবে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে তারা প্রতিদিন গড়ে ৫০ টাকা করে বিভিন্ন মহলকে চাঁদা দিয়ে আসছেন। এতে দেশের কোনও লাভ হচ্ছেনা। উল্টা ব্যক্তিবিশেষ লাভবান হচ্ছে। এসব চাঁদার মোট হিসেব করলে দেখা গেছে তা প্রায় দৈনিক ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হকাররা সমন্বয় করে ঢাকা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে টোল হিসেবে দিতে চায়।
এক্ষেত্রে হকার্স ফেডারেশনের প্রস্তাব হচ্ছে তাদেরকে সরকার ফুটপাতে কিছুটা করে জায়গা দেবে এবং কিছু অংশ পথচারী চলাচলের জন্য রাখবে। এতে করে হকাররা রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে বসবে। এবং সরকারকে ৯ বর্গফুট জায়গার জন্য প্রতিজন হকার ২৭ টাকা করে টোল দেবে। যা ঢাকার মোট হকার হিসেবে দাঁড়াবে প্রায় ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। হকার
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, কেবল ঢাকা শহরেই আড়াই লাখের বেশি হকার রয়েছে। তাদের পরিচালিত দোকানের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার।
বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশন সভাপতি এম এ কাশেম বলেন, “আমরা চাঁদা দিতে চাইনা, আমরা সরকারের কাছে আমাদের পুনর্বাসনের দাবি জানাই। বিনিময়ে আমরা আমরা সরকারে বিশাল অংকের টোল দিতে আগ্রহী। ইতোমধ্যে আমাদের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব সিটি কর্পোরেশনের কাছে দিয়েছি যা তারা আমলে নিয়েছে।”
এদিকে, এ বিষয়ে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. আলমগীর আলী পুনর্বাসনের মাধ্যমে হকারদের করের আওতায় আনার কাজটি দেখভাল করছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে একটি নির্দেশনাও দিয়েছেন।
ডিএসসিসি প্রশাসক মো. আলমগীর আলী বলেন, “ঢাকা শহরে যেখানে সেখানে হকাররা বসছে ফলে রাস্তা দখল করে এভাবে হকারদের বসে পড়াতে যান জট সহ নানান ভগান্তিত পোহাতে হয় নাগরিকদের। তবে এটাও ঠিক হকারদের এই ভাবে দোকান দিয়ে বসায় সেখান থেকে নাগরিকরা পণ্য কিনছেন। অতএব, এসব হকারদের একটি ব্যবস্থাপনায় আনা জরুরী। অন্যদিকে কর আদায়ের মধ্য দিয়ে সিটি করপোরেশনের আয় বাড়বে।”
ইতোমধ্যে, হকাররা ঢাকায় কিছু এলাকায় ফুটপাতে বৈধ ভাবে দোকান দিতে সিটি করপরেশান এর নিকট একটি তালিকা দিয়েছে। এসব এলাকা হচ্ছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পূর্ব পাশে ফুটপাত ও খালি জায়গা, মতিঝিলের সেনাকল্যাণ ভবন ও ওয়াসার সামনের ফুটপাত বা খালি জায়গা, সোনালী ব্যাংক হেড অফিসের পশ্চিম পাশের প্রথম আলোর গলি ও তার পাশের গলি, বায়তুল মোকাররম মসজিদের পূর্ব পার্শের পরিত্যক্ত খালি জায়গা, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে ধোলাইপাড় পর্যন্ত খালি জায়গা, কাজলা থেকে শনিরআখড়া পর্যন্ত রাস্তার উত্তর পাশের খালি জায়গা, ওয়াইজঘাট বুড়িগঙ্গার নদীর পাড়ের ফুটপাত ও খালি জায়গা, সেনাকল্যাণ ভবন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনের খালি জায়গা, কমলাপুর-মুগদা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পশ্চিম পাশ ও টিটিপাড়া বস্তির পূর্ব পাশের খালি জায়গা, স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের খালি জায়গা।