দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাঞ্চল্যকর নারায়ণগঞ্জ সেভেন মার্ডার ঘটনার তদন্ত চলছে। কিছু আসামী গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামী এখনও পলাতক। এদিকে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের শ্বশুর অভিযোগ করেছেন তাঁকে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় ওই ডায়েরি করেছেন।
থানার ডায়েরিতে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম বলেছেন, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টারের ভাতিজা নজরুল এবং মনিরসহ ৩ জন তাকে ফোন করে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারা বলেছে, মামলা সম্পর্কে আর কোনো কথা বললে তারা আমাকে গুলি করে হত্যা করবে।
উল্লেখ্য, ২৭ এপ্রিল প্যানেল মেয়র নজরুল ৫ সহযোগীসহ ও আইনজীবি চন্দন সরকার ড্রাইভারসহ অপহরণ হন। এর তিনদিনের মাথায় শীতলক্ষ্যা থেকে তাদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে এ ঘটনার পর নিহত নজরুলের শ্বশুর বেশ কিছু অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে এসব অভিযোগগুলো সত্য বলে প্রমাণ হয়।
নজরুলের শ্বশুর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম প্রথমে অভিযোগ করেন এই ঘটনার সঙ্গে র্যাব-১১ এর কর্মকর্তারা জড়িত। র্যাব ৬ কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পরবর্তীতে সে অভিযোগ প্রাথমিক প্রমাণ হওয়ায় ওইসব র্যাব কর্মকর্তাদের প্রথমে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং পরে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টে ফেরত পাঠানো হয়। পরে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্ট তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিকে বিষয়টি আমলে এনে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের (৩ কর্মকর্তাকে) গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। যদিও রিমান্ডে নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৪ ধারায়। এই মামলার সঙ্গে এখনও সংযুক্ত করা হয়নি তাদের।
পরবর্তী সময়ে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নূর হোসেনকে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হতে পারে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের রক্ষা করতে এমন কাজ করা হতে পারে।
মামলা ভিন্ন খাতে নেওয়া হচ্ছে এবং আসামীরা কেনো পালিয়ে গেলো এমন নানা অভিযোগ বিভিন্ন সময় করেছেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। আর এ কারণে তাঁকে আগেও একবার হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আবারও সেই একই ধরনের হুমকি দেওয়া হলো।
দেশের এ যাবত কালের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো নারায়ণগঞ্জের ৭ জনকে অপহরণ ও পরে হত্যার ঘটনা। সভ্যসমাজের সকল নির্মমতাকে হার মানিয়েছে এই ঘটনা। এক নজরুলকে হত্যা করেই খান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। নজরুলের সাথে জীবন দিতে হয়েছে আরও ৬ জনকে। নজরুলের সঙ্গে রাজনৈতিক কলহ থাকলেও আইনজীবি চন্দন সরকার ছিলেন একেবারে নির্দোশ একজন ব্যক্তি। ঘটনা দেখে ফেলার কারণে তাকেও জীবন দিতে হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অপহরণ, গুম ও খুনের ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষও শঙ্কিত। ঘর থেকে বের হয়ে আবার কেও ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা সেই নিশ্চয়তা নেই। অর্থ আর ক্ষমতার প্রাচুর্য মানুষকে এখন অমানুষে পরিণত করেছে। ধর্মীয় নীতি ও আদর্শের মূল্যায়ন পারে- এমন অনাচার থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে আনতে। তা নাহলে সভ্য সমাজের মানুষ হিসেবে আমরা কখনও পরিচয় দিতে পারবো না।