দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শৃংখলা ও উন্নত সেবার লক্ষ্যে মোটরযানের রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন (আরএফআইডি) ট্যাগসহ রেট্রো-রিফ্লেকটিভ নাম্বারপ্লেট চালুর মাধ্যমে পরিবহন খাত নতুন যুগে প্রবেশ করলো। প্রধানমন্ত্রী গতকাল ৩১ অক্টোবর সকালে তার কার্যালয়ে এই ব্যবস্থার সঙ্গে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মোটরযানের মালিক, চালক, নিয়ন্ত্রক ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারীসহ সবার সুবিধা নিশ্চিত করতে এই ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থা যানবাহন সেক্টরের সেবার মান এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বি আরটিএ) সামর্থ্য ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে’ এ আশাবাদও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্ত করে বলেন, ‘এতে গাড়ির মালিক ও যাত্রীরা উপদ্রবমুক্ত হবেন এবং একজনের নামে কয়টা গাড়ি আছে, তাও জানা যাবে। বি আরটিএ-এর এই ডিজিটালাইজেশনে সহযোগিতার জন্য তিনি মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান এবং সাধারণের মাঝে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে যোগাযোগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ট্রাফিক আইন সম্পর্কে প্রথমে স্কুল শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে মোটরযান কর ও ফি অনলাইন ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। ই-গর্ভনেন্স, ই-বাণিজ্য, ই-স্বাস্থ্য, ই-শিক্ষা, ই-ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ই-সেবা চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আধুনিক প্রযুক্তি চালুর মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রা সহজ ও স্বচ্ছন্দ করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
পরে শেখ হাসিনা বি আরটিএ-এর চেয়ারম্যানকে একটি ডিজিটাল নাম্বার প্লেট হস্তান্তরের মাধ্যমে মোটরযানের রেট্রো-রিফ্লেকটিভ নাম্বারপ্লেট, রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন ট্যাগ ও ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাবাহিনী প্রধান ও বিএমটিএফের চেয়ারম্যান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া, সড়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব এমএএন সিদ্দিকী, বি আরটিএ-এর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান ও বিএমটিএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনী পরিচালিত বিএমটিএফ পরবর্তী ১৫ বছরের জন্য বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও)-এর ভিত্তিতে এই নতুন ব্যবস্থার নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। বি আরটিএ এ জন্য প্রথম ৫ বছরে বিএমটিএফকে প্রায় ছয়শ কোটি টাকা দেবে।
উল্লেখ্য, এই ব্যবস্থায় প্রত্যেক যানবাহনের জন্য রেজিস্ট্রেশন নাম্বারসহ এক ধরনের নাম্বার প্লেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা দিন ও রাত উভয় সময়ে দেখা যাবে। এসব মোটরযান সহজে চিহ্নিত করতে এতে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি থাকবে। কোনো মোটরযান দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও ডিজিটাল প্লেট সেটি সনাক্তে সাহায্য করবে। এই ব্যবস্থা ভুয়া নাম্বার প্লেট ও একই নাম্বার বিভিন্ন যানবাহনে ব্যবহারও সনাক্ত করবে। জানা গেছে, ইতিপূর্বে চুরিকরা গাড়িতে ভুয়া নাম্বার প্লেট ব্যবহার করে ধোকা দেওয়া হতো। এই ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তনের ফলে গাড়ি চুরি রোধ, দুর্ঘটনা রোধসহ জনসাধারণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। যদিও এই পদ্ধতি প্রথম পর্যায়ে কিছুটা ব্যয়বহুল হবে। তবুও ভালো কিছুর জন্য কিছুটা ত্যাগতো শিকার করতেই হবে- এমনটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।