দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাটমোহরসহ চলনবিলে শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে হাজার হাজার অতিথি পাখি। শীতের শুরুতে শুকিয়ে যাওয়া জলাশয়ে মিলছে পুঁটি, খলসেসহ ছোট ছোট সব মাছ। এসব মাছ খাওয়ার লোভেই চলনবিলে আশ্রয় নিয়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। আর এই সুযোগে বিল থেকে অবাধে পাখি শিকার করে হাটে-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, শিকারিরা চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে খুঁটি পুঁতে বিশেষ কায়দায় তৈরি করেছে ফাঁদ। এসব ফাঁদের সামনে একটি বাঁশের মগডালে রাখা হয় শিকারি বক। বকের ঝাঁক যখন নির্মিত ফাঁদের ওপর দিয়ে দল বেঁধে ওড়ে যায়, তখন শিকারি বকটিকে নাচাতে থাকে। একপর্যায়ে শিকারি বকটি ডাকাডাকি শুরু করলে বকের ঝাঁকটি বিশেষভাবে নির্মিত ফাঁদঘরের ওপর বসে। তখন শিকারি ভেতর থেকে একে একে বক ধরে খাঁচায় ভরে। চাটমোহরে চলনচিলের মধ্যে বোয়াইলমারী, সেনগ্রাম, নিমাইচড়া, কাটাখালী সমাজ, হাণ্ডিয়াল হাসমারী, ডাহিয়া ও বিলদহর এবং গুরুদাসপুর এলাকায় কিছু পেশাদারী পাখি শিকারি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
চলনবিলের সেনগ্রাম নিমাইড়া গ্রামের অধিবাসী ইসমাইল, জামাল হোসেন ও রন্জু জানান, বর্ষার শেষভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করায় জমি জেগে ওঠে। আর জমিতে অল্প পানি থাকায় দু-একটি মাছও থাকে। আর এই মাছ খাওয়ার লোভে অতিথিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা বিলে ভিড় জমায়। এই সুযোগেই লোভী শিকারিরা ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও চলনবিল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সদস্যসচিব ডেইজি আহমেদ বলেন, চলনবিলে মাছ খাওয়ার জন্য এক সময় ৩০-৪০ প্রজাতির অতিথি পাখি ভিড় করত। কিন্তু আগের মতো আর পাখি চোখে পড়ে না। কারণ পাখিরা নিরাপদ না ভাবলে সেখানে আসতে চায় না। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে কয় প্রজাতির পাখি আসছে, তা আবার শিকারিদের ফাঁদে ধরা পড়ছে। লোভী পাখি শিকারিদের কারণে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
পাখি শিকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চলনবিল অঞ্চলের বন কর্মকর্তা হারুনার রশিদ খান বলেন, যারা পাখি বা ‘বক’ শিকার করছে, তারা কেও পেশাদার নয়। শখের বশত তারা এ কাজ করছে। এক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে না ওঠলে, শুধু আইন দিয়ে পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব নয়।