দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভবিষ্যৎটি অনেক চমকপ্রদ এই কথা আপনাকে মানতেই হবে। কেননা আজ থেকে মাত্র একযুগ আগের কথা চিন্তা করুন একটি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের কতগুলো জিনিস বহন করতে হতো একটি ক্যামেরা, একটি ল্যাপটপ, ওয়ারল্যাস ফোন, ঘড়ি, ডায়েরী ইত্যাদি কিন্তু এখন একটি আইফোন কিংবা গ্যালাক্সি ফোন হলেই সব হয়ে যাচ্ছে। তেমনি ভবিষ্যতে আরো কিছু প্রযুক্তি আসছে যা আমাদের চমকে দিবে।
১. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সুপার স্টোর
এই বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুপার শপটি চালু হয়েছে। এই সুপার শপের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানে একটি ভার্চুয়াল পর্দায় ভোক্তা পণ্যগুলো সাজানো রয়েছে। একজন ক্রেতা শুধুমাত্র সেগুলো টাচের মাধ্যমে কি নিতে চাচ্ছেন সনাক্ত করবেন এবং সেভাবে দাম পরিশোধ করে বের হওয়ার সময় তার পণ্যগুলো নিয়ে বের হয়ে যাবেন। এই শপের আলাদা কোন সার্ভিসম্যান কিংবা ক্যাশিয়ার নেই। আপনি অর্থ পরিশোধের পরেই আপনার পণ্যগুলো হাতে পাবেন।
২. স্থিতিস্থাপক মোবাইল ফোন
ফ্লেক্সিবল কিংবা স্থিতিস্থাপক অথবা বাঁকানো যায় এমন ধরনের মোবাইল ফোনের চিন্তা প্রথম শুরু করে নোকিয়া। কিন্তু বাজারে এখনো নোকিয়ার সেই কাঙ্ক্ষিত মোবাইল ফোন না এলেও অন্য কোম্পানীগুলোর বাঁকানো ফোন সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো আরো কয়েক বছরের মধ্যেই এমন ধরণের ফোন বাজারে পাওয়া যাবে।
৩. চোখের লেন্সে ক্যামেরা
গুগল গ্লাসের হাত ধরে যে স্বপ্নের শুরু সেই স্বপ্ন এখন আরো বিস্তৃত আকারে দেখা হচ্ছে। চোখের লেন্সকেই এখন ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহারের চিন্তা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় তাতে যেন ইন্টারনেট কানেকশন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর সাথে কানেক্ট করা যায় তাও চিন্তা করা হচ্ছে।
৪. গুগল ফাইবার
গুগল বেশ কয়েক বছর যাবত চরম গতির ইন্টারনেটের চিন্তা করে আসছে। যেখানে ইন্টারনেট বেগ হবে ১০ জিবি। তারমধ্যে গ্রাহক তার ডিভাইসে ব্যবহারের বেগ পাবেন অন্তত ১ জিবি। সাধারণ একটি ১০৮০ রেজুলেশনের মুভির আকার হয়ে থাকে ২.৫ জিবি কিংবা তারচেয়ে বেশি। কল্পনা করুন তো আপনার ১০জিবি বেগের ইন্টারনেট থাকলে কি তখন এই মুভিটি ডাউনলোড করবেন নাকি অনলাইনেই দেখে নিবেন।
৫. ওয়ারল্যাস ওয়াইফাই সেন্সর
সাম্প্রতিক দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন জাদুঘরে এটি চালু হয়েছে। এরফলে দর্শকরা যে সকল স্ন্যাক জাতীয় খাবারের প্যাকেট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন কিন্তু তা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন না তার সমস্যা দূর হয়েছে। এতে ওয়াইফাই সেন্সরের মাধ্যমে দর্শক খাবারের প্যাকেটটি খাওয়ার পর পর দলামোচড়া শুরু করলেই ট্রেস বাস্কেটটি তার সামনে চলে আসবে। কিন্তু দর্শক যদি সেখানেও না ফেলেন অন্য কোথাও ফেলতে চান ট্রেস বাস্কেটটি সেখানে চলে যাবে। একটি কম্পিউটার ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে দর্শকের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করে।
৬. গুগল কার
রাস্তায় ট্যাক্সিক্যাবে উঠে ড্রাইভারকে নিজের গন্তব্যস্থল চিনিয়ে দেওয়া সেই মতে রাস্তা দেখিয়ে দেওয়ার দিন সম্ভবত শেষ হচ্ছে। কেননা গুগল ইতোমধ্যে এনেছে গুগল কার যা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিজে নিজেই রাস্তা চিনে নিবে এবং সেভাবে তার যাত্রীকে পৌছে দিবে।
৭. থ্রিডি প্রিন্টিং
ইতোমধ্যে এর সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে নিজের ইচ্ছেমতো ডিজাইনের পোশাক সবকিছুই সম্ভব হচ্ছে এই থ্রিডি প্রিন্টিং এর কল্যাণে। শুধু কি তাই আজকাল কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করে তা মানুষের শরীরেও স্থাপন করা হচ্ছে।
৮. ওয়ার্ড লেন্স
এটি কি পরিমাণ প্রয়োজনীয় একটি আবিস্কার আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না। মনে করুন আপনি বাংলাদেশ থেকে প্রথম স্পেনে গেলেন এবং স্প্যানিশ ভাষা সম্পর্কে আপনার ধারণা নেই। এখন রাস্তার নির্দেশাবলী কিছুই বুঝছেন না। চিন্তা নেই আপনার সেলফোনের ওয়ার্ড লেন্স ক্যামেরাটি চালু করুন। এবার সাইনের উপর ধরুন সেটি আপনি যে ভাষায় জানতে চাচ্ছেন তাতে অনুবাদ করে দিবে।
৯. মেট্রোলাইব্রেরী
মেট্রো রেলের কথা শুনেছেন কিন্তু মেট্রো লাইব্রেরী, সেটি আবার কি? হাঙ্গেরীতে চালু হয়েছে এমন একটি লাইব্রেরী যেখানে রয়েছে অনলাইন বই বাজারের লাখখানিকের উপরে বই। আমাজন, গুগল থেকে শুরু করে সকল অনলাইন বইয়ের ইলেকট্রনিক সংস্করণ এখানে পাবেন। ভার্চুয়াল পর্দায় আপনি বইগুলোর পাতা উল্টেপাল্টে দেখতে পারবেন। তারপর পছন্দ হলে এর কিউ.আর কোডটি স্ক্যান করে নিতে পারবেন নির্দিষ্ট দাম পরিশোধ করে। বেশ হয়ে গেল আপনার বই, এবার যেখানে ইচ্ছে সেখানে বসে পড়তে পারবেন এটি।