দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম হলো নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ যাকে আমরা সেন্ট মার্টিন আইল্যান্ড বলে থাকি। ভূ-প্রাকৃতিক দিক এবং মাটির গঠনের দিক থেকে এই দ্বীপ সম্পূর্ণ আলাদা আমাদের দেশের অন্যান্য অঞ্চল হতে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ এটি একটি প্রবাল দ্বীপ। সাধারণ মাটি বা পলি এর উপরের স্তরমাত্র কিন্তু এর ভিত্তি বা বেস হলো সম্পূর্ণরূপে প্রবাল।
প্রবাল আসলে কি?
প্রবাল হল অ্যান্থজোয়া শ্রেনীভূক্ত একটি সামূদ্রিক প্রানী। এরা পলিপ তৈরি করে এবং সাধারণত এরা কলোনি তৈরি করে বসবাস করে। কলোনির সমস্ত পলিপ জিনগত ভাবে অভিন্ন হয়ে থাকে। এরা প্রাণী হলেও, জীবনের পূর্ণবয়ষ্ক অবস্থায় সাগরতলে কোন দৃঢ় তলের উপর গেড়ে বসে বাকি জীবন পার করে দেয় নিশ্চল হয়ে। এক সাথে লক্ষ কোটি প্রবাল পাশাপাশি অবস্থান করে তৈরি করে প্রবাল কলোনি।
কিভাবে প্রবাল দ্বীপ তৈরি হয়?
এক একটি প্রবাল যেখানে গেড়ে বসে সেখানে নিজের দেহের চারপাশে ক্যালসিয়াম কার্বনেট নিঃসরণের মাধ্যমে শক্ত পাথুরে খোলস বা বহিঃকঙ্কাল তৈরি করে। একটা প্রবাল পলিপের মৃত্যুর পরেও খোলসটি রয়ে যায়, তারপর সেই খোলস প্রবালের দেহাবশেষের উপর নতুন করে আবার প্রবাল বসতে পারে। এভাবে একটা কলোনি বহু প্রজন্ম ধরে চলার ফলে বড়সড় পাথুরে আকৃতি ধারন করে এবং তৈরি হয় বড় প্রবাল দ্বীপ এবং প্রবাল প্রাচীর। আর এভাবেই গড়ে উঠেছে সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপ।
কেন প্রবাল আহরণ করা ঠিক নয়?
বেশিরভাগ পর্যটক সমুদ্র দেখতে গিয়ে ফিরে আসার সময় স্যুভেনির হিসেবে বা শখের বসে কিনে নিয়ে আসে এই ধরনের প্রবাল তারপর ড্রয়িংরুমের শোভাবর্ধনের জন্য সাজিয়ে রাখে। কিন্তু জানেন কি এই ধরনের প্রবাল কিনে আমরা প্রকৃতির কিংবা সামুদ্রিক পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি করছি। ক্রমাগতহারে সমুদ্রের গভীর থেকে এই সকল প্রবাল তুলে ফেলতে থাকলে তা একদিন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কেননা এই প্রবাল প্রাচীরের উপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ সেইন্ট মার্টিন। কিন্তু এই প্রবাল আহরণের ফলে দ্বীপের ভিত্তিমূলে আঘাত আসবে। ফলে এই দ্বীপ তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।