দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের শরীরের প্রায় ৭০ ভাগ পানি। তাই আপনি হয়তো ভাবতে পারেন পানি মানুষের সবচেয়ে নিকটতম বন্ধু। কিন্তু আপনার এই ধারণা পুরোপুরি ভেঙ্গে দিবে ডব্লিউএইচওর কিছু জরিপ। তাদের মতে প্রতিবছর সারাবিশ্বে প্রায় ৪৮ শতাংশ মানুষ মারা যায় পানিবাহিত রোগে তার মধ্যে শুধুমাত্র আফ্রিকায় মারা যায় ২৮ শতাংশ। পানি জীবন কিন্তু সেই পানিই আবার মরণ বুঝতে পারবেন নিচের কারণগুলো পড়লে।
১. ব্রেইন অ্যামিবা
আপনি হয়তো কোন একটি লেকে বেশ আরাম করেই সাতার কাটছেন। কিন্তু আপনি জানতেই পারবেন না আপনার ডুব দেওয়ার সাথে নাকের ভেতর দিয়ে মস্তিস্কে চলে যেতে পারে এক ধরনের অ্যামিবা। এই অ্যামিবাগুলোর প্রিয় খাবারই হলো মানুষের ব্রেইন। সাম্প্রতিক ফ্লোরিডার সারাসোটা কাউন্টিতে এমন একটি অ্যামিবার শিকার একজন ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। এই অ্যামিবাগুলোর নাম নাইগ্লিরা ফ্লোরি। এরা সাধারণত পরিস্কার পানিতেই বসবাস করে, যেমন লেক, পুকুর ইত্যাদি। এই অ্যামিবার শিকার হয়ে এই পর্যন্ত প্রায় ৩৩ জন মানুষ মারা গিয়েছে।
২. হাইপারথার্মিয়া
আপনার কি জেমস ক্যামেরনের টাইটানিক মুভিটির কথা মনে আছে? মনে থাকলে আপনার জানা থাকবে বরফজলের শীতলতা মানুষকে কিভাবে মেরে ফেলতে পারে। পানির তাপমাত্রা নিচের দিকে নামতে থাকলে পানিতে থাকা আপনার দেহ তাপ হারাতে থাকবে। এক পর্যায়ে তা আপনার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ করে দিবে তার ফলে আপনি মারা যাবেন।
৩. সামুদ্রিক ব্যাকটেরিয়া
সাগরের জলে ঝাঁপিয়ে পড়তে কি মজাই না পাচ্ছেন। কিন্তু আপনার জন্য একটি সতর্ক বার্তা সাগরের সেই লোনাজলে রয়েছে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা আপনার শরীরের মাংস খেয়ে ফেলবে। মজার বিষয়টি হলো আপনি তা ধরতেই পারবেন না। আপনার ত্বকে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে ত্বকের ইনফেকশন করবে। ফলে সেই স্থানটিতে ত্বকের পচন শুরু হবে।
৪. পানি তড়িৎআহিত
পানি একটি উত্তম তড়িৎবাহক। পানির এই তড়িৎবাহিতার জন্য আকাশের বজ্রপাতের ফলে পুকুর কিংবা নদীর জলে থাকা ঠিক নয় কেননা এই সকল বজ্রপাত প্রায় ৩০০০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। এই সময় আপনি জলে থাকলে তা নিমিষেই আপনাকে মেরে ফেলতে যথেষ্ট।
৫. সাগরের প্রাণী
সাগরের জলের গভীরে রয়েছে নানা রকম প্রাণী। সমুদ্রবিজ্ঞানীদের তথ্যমতে সাগরতলের এই সকল প্রানীদের মাত্র ৩০ শতাংশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গিয়েছে। আমাদের পৃথিবীর সাগরের এই বিশালত্বের মাঝে পুরোপুরি কার্যকর গবেষণা এখনো সম্পূর্ণ করা যায়নি। তাই এই সকল প্রাণীর কোনটি কখন হিংস্র রুপ নিতে পারে তা আপনি জানতেও পারবেন না। করাত মাছ নামে একটি মাছ রয়েছে এটি বলতে গেলে একেবারেই নিরীহ কিন্তু ক্ষেপে যাওয়ার পর এই প্রাণীর হিংস্রতা আপনার মনে ভয় ধরিয়ে দিবে। তাছাড়া আরো আছে ভয়ংকর শার্ক, ইলেকট্রিক ঈল আরো কত কি!
৬. পানিবাহিত রোগ
পৃথিবীর মোট রোগবালাইয়ের মধ্যে বেশিরভাগ অংশই পানিবাহিত রোগ। ফলে পানিবাহিত এই সকল রোগের কারণেও আপনার মৃত্যু হতে পারে। এদের কোন জীবানুটি যে কিভাবে সংক্রামিত হতে পারে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা নাও থাকতে পারে। আফ্রিকার কঙ্গোতে একটি কারখানার বর্জ্য ফেলা হতো একটি নালায় সেই বর্জ্য ধীরে ধীরে নালা থেকে নদীতে গিয়ে পড়ে। গবাদিপশু এই বর্জ্যে আক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে তা মানুষে সংক্রামিত হয়।
৭. জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা
জলোচ্ছ্বাসের ভয়াবহতা আমাদের দেশকে নতুন করে পরিচয় করে দেওয়ার মতো কিছে নেই। ১৯৯১ সালের জলোচ্ছ্বাসের ভয়াবহতা যারা দেখেছে কিংবা শুনেছে তারা তা আজীবন মনে রাখবে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার সুনামি, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা টর্নেডো এগুলো সবগুলোই প্রাণহানিকর। আর বন্যার সময় আমাদের দেশের দুর্যোগের ক্ষেত্রে সীমা থাকে না।
তথ্যসূত্রঃ ভাইরালনোভা