দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিবেশীর সাথে বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে এক পরিবারের সবার সাহায্য নিয়ে নিজ পিতাই মেয়েকে হত্যা করে। পরে পুলিশ হত্যায় অংশ নেয়া ৬ জনকে আটক করে।
আদমদীঘি উপজেলায় শুক্রবার স্থানীয় থানার পুলিশ গ্রেফতারকৃত ছয় জনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজীর করলে আসামীরা হত্যার দায় শিকার করে নেয়। পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম জানান, এর আগে হত্যার পর পর নিহতের বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও খুনের মামলা করে, সেই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে এবং এছাড়া ঘটনার প্রকৃত তদন্তে উঠে আসা সত্য ঘটনা নিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবে।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী নিহতের চাচা রবিউল ইসলাম। নিহত রুমার বাবা আব্দুল ওয়াহাব (৪৩) সম্পূর্ণ হত্যা সঙ্ঘঠিত করতে পরিবারের বাকি ৬ সদস্যের সাহায্য নেন। হত্যা কান্ডে জড়িত বাকি ৫ জন হলেন, চাচা জোনায়েদ আকন্দ (৩৫), আব্দুল ওয়াহাবের চাচাত ভাই রবিউল (২৪), চাচা সাইফুল আকন্দ (২৩), রুমার সৎ দাদী ফেরেজা বেগম (৫৫) ও রবিউলের ভগ্নিপতি হাসান মণ্ডল (২৮)।
হত্যার সম্পূর্ণ ঘটনা আসামীরা পুলিশের কাছে বর্ণনা করে, পুলিশ আসামীদের বর্ণনা অনুযায়ী সাংবাদিকদের জানায়, সম্পূর্ণ ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। ৬ হত্যাকারী মিলে হত্যার আগেই বৈঠক বসে। তাদের নিজেদের মাঝে আলোচনা হয় কাকে হত্যা করা হবে। হত্যার উদ্দেশ্য ছিল জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেশী আব্দুর রহমান, শফির উদ্দিন ও আহসানসহ কয়েকজনের সাথে হত্যাকারী পরিবারের বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এসব বিরোধ থেকে মুক্তি পেতে নিজেদের পরিবারের এক সদস্যাকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চায় তাঁরা।
হত্যার আগে প্রাথমিক আলোচনায় নিহত রুমার দাদী ফেরেজাকে খুনের প্রস্তাব করা হয়। সে রাজী না হলে রুমাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। আব্দুল ওয়াহাব আকন্দের কন্যা রুমা খাতুন অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করত।
৩১ আগস্ট রাত ১২ টার দিকে রুমাকে হত্যা করতে তার চাচা জোনায়েদ আকন্দ ঘরের বাইরে থেকে লোহার শিক দিয়ে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে। ঘুমে থাকা রুমাকে খাট থেকে তাঁরা মাটিতে নামায় এবং পরে বাবা আব্দুল ওয়াহাব, দাদী ফেরোজা, রবিউল ও তার বোন জামাই হাসান আলী মিলে চেপে ধরে এবং গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে।
পরে সবাই স্বাভাবিক ভাবেই নিজ নিজ ঘরে চলে যায় এবং রাত ১ঃ৩০ মিনিটের দিকে চেঁচামেচি শুরু করে এবং বলতে থাকে কে বা কারা রুমাকে হত্যা করে ফেলে গেছে, তাঁরা পরে থানায় হত্যা এবং ধর্ষণ মামলা করে।
পরে পুলিশ তদন্ত করতে গেলে ঘটনার মূল রহস্য বেড়িয়ে আসে। পরে ৬ জনকে হত্যার দায়ে গ্রেফতার করে পুলিশ নিজেদের জিম্মায় রাখে এবং সবাই খুনের কথা শিকার করে।