দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কথাটি এখনও কেও বিশ্বাস করেন না। কারণ মৃতব্যক্তির হৃদপিণ্ড কখনও কাজে আসার কথা নয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার শল্য চিকিৎসকরা ঠিক এমন দাবিই করেছেন। তারা ‘মৃত’ব্যক্তির হৃৎপিন্ড জীবিত ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপনের দাবি করেছেন।
সংবাদ মাধ্যমে আসা এমন খবর কারই বিশ্বাস হওয়ার কথা নয়। বাস্তবে এটি ঘটতে পারে তাও অবিশ্বাসযোগ্য। তবে ‘মৃত হৃৎপিন্ড’ ব্যবহার করে বিশ্বের প্রথম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ওইসব শল্য চিকিৎসকরা।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ইতিপূর্বে যেসব হৃদপিণ্ড ব্যবহৃত হয়েছিল, তার সবই ছিল দাতার মস্তিষ্কের মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও তার স্পন্দন হতে থাকা এমন হৃৎপিণ্ড।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকদের একটি দল প্রথমবারের মতো অন্তত ২০ মিনিট আগে স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া এমন ‘মৃত’ একটি হৃৎপিণ্ড ব্যবহার করে সফল অস্ত্রোপচার করেছেন বলে দাবি করেছেন। খবর বিবিসি’র।
প্রথমবারের মতো ‘মৃত’ হৎপিণ্ড পাওয়া রোগী ৫৭ বছর বয়সী মিশেল গ্রিবিলাস নামে ওই ব্যক্তি বলেছেন, ‘তিনি নিজেকে ১০ বছর কম বয়সী বলে অনুভব করছেন, এবং তিনি এখন রীতিমতো ‘অন্য ব্যক্তিতে’ পরিণত হয়েছেন।’
এতদিন পর্যন্ত মানব দেহের হৎপিণ্ডই একমাত্র অঙ্গ ছিল যা স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আর তা কখনও ব্যবহার করা যেতো না। স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া হৃৎপিণ্ড রক্ত সংবহন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বলে এগুলো আর ব্যবহার করা হতো না। আগে সাধারণত মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া মৃত ব্যক্তিদের স্পন্দিত হতে থাকা হৃৎপিণ্ড সংগ্রহ করা হতো এবং তা ৪ ঘন্টার মতো বরফে রেখে দিয়ে অত:পর রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হতো।
সিডনিতে শল্য চিকিৎসকরা যে কাজটি করেছেন তা হলো, স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া যে হৃৎপিণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে, তা ‘হার্ট-ইন-এ-বক্স’ নামক যন্ত্রে স্থাপন করে তাতে স্পন্দন ফিরিয়ে আনা হয়। মূলত ওই যন্ত্রটি হৃৎপিণ্ডটিকে উষ্ণ রেখে হৃৎ স্পন্দন ফিরিয়ে এনেছে ও হৃৎপেশীগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য যন্ত্রটির মাধ্যমে এক ধরনের তরলও ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। খবরে বলা হয়েছে, দুই মাস আগে হৃৎরোগী গ্রিবিলাসের শরীরে এই অস্ত্রোপচারটি করা হয়। গ্রিবিলাসের পর একই ধরনের আরও দুটি সফল প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শল্য চিকিৎসকরা।