দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উইন্ডোজ ফোনের অনেক সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনি বেশকিছু সমস্যাও রয়েছে। উইন্ডোজ ফোনের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা।
মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ফোন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত হচ্ছে, সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বড় রকমের অ্যাপ সমস্যা। আর এই অ্যাপ সমস্যাকে উইন্ডোজ ফোনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
যেমন আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডের জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোর অধিকাংশই আপনি উইন্ডোজ ফোনে পাবেন না। ব্যবসা এবং প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার এক প্রতিবেদনে উইন্ডোজ ফোনের সমস্যার কথা তুলে ধরেছে।
এসব সমস্যা জানতে গিয়ে দেখা যায়, মাইক্রোসফটের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে এর অ্যাপ স্টোরটি ভুয়া অ্যাপে ভর্তি থাকে। আবার জনপ্রিয় ১শ’টি অ্যাপের মধ্যেও রয়েছে অনেক ভুয়া অ্যাপ। সম্প্রতি তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান জ্যাকডো রিসার্চ ৩০ পৃষ্ঠার একটি বিশাল প্রতিবেদনে উইন্ডোজ ফোনের বড় এই দুর্বলতার বিষয়টিই তুলে এনেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উইন্ডোজ ফোনে শুধু ইউটিউব অ্যাপ অনুসন্ধান করলেই দেখা যাবে অসংখ্য ভুয়া ইউটিউব অ্যাপ হাজির হচ্ছে। একইভাবে ‘সুইং কপ্টার’ গেমটি অনুসন্ধান করলেও ভুয়া বেশ কিছু অ্যাপ এসে হাজির হয় এতে।
অ্যাপ স্টোরের জনপ্রিয় ১শ’টি অ্যাপের মধ্যে ৩৮টি আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডে সহজলভ্য, ৩৮টি অ্যাপ ফ্ল্যাশ লাইটের মতোই বেসিক অ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাটের মতো অ্যাপগুলোর বিকল্প হিসেবে রয়েছে ৯টি অ্যাপ, ৮টি অ্যাপ রয়েছে ভুয়া আর মাত্র ৭টি মাইক্রোসফটের তৈরি অ্যাপ। জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মকে কখনই খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে কোনো অ্যাপ উন্মুক্ত হওয়ার ২শ’ দিন পর তা উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মে আসে।
জ্যাকডো রিসার্চ তাদের প্রতিবেদনে আরও লিখেছে যে, মাইক্রোসফটের জন্য এই ক্ষেত্রটি নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন কাজ। এর কারণ হলো, মাইক্রোসফটের বাজার খুব ছোট। ২০১৩ সালে ৩.৪ ভাগ বাজার দখল করলেও আইডিসির তথ্য অনুযায়ী, এ বছর তা কমে ২.৮ ভাগে নেমে এসেছে। উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মে অ্যাপ তৈরির উৎসাহ পান না কোনো ডেভেলপাররা। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইক্রোসফটের নতুন ওএস উইন্ডোজ ১০ বাজারে এলেও তা খুব বেশি কাজে আসবে না বলেই মনে হচ্ছে।
তবে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তাদের উইন্ডোজ ১০ পিসি, ট্যাব ও মোবাইল প্ল্যাটফর্মের উপযোগী হবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, উইন্ডোজ ফোনে যে ধরনের অ্যাপ দরকার পড়ে তার চেয়ে পিসির অ্যাপ সম্পূর্ণ আলাদা।
জ্যাকডো রিসার্চের প্রতিবেদনে অবশ্য মাইক্রোসফটকে নিরাশও করা হয়নি। মাইক্রোসফটের জন্য পরামর্শ হিসেবে গবেষকেরা বলেছেন, মাইক্রোসফটকে একটি ফ্ল্যাগশিপ মোবাইল ফোন তৈরি করতে হবে। যাতে করে আসল উইন্ডোজ ফোন কী তা ক্রেতারা বুঝতে পারেন। সেই ফোনটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। আবার অ্যাপ নির্মাতারা যাতে এই প্ল্যাটফর্ম হতে আয় করতে পারেন- তার সুযোগও করে দিতে হবে তাদেরকে। তাহলে দু’কুলই রক্ষা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।