দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আগুন হতে বাঁচাবেন কাকে- মা না বান্ধবীকে? পরীক্ষায় করা হয়েছে এমন এক উদ্ভট প্রশ্ন! এমন প্রশ্নে হতবাক সকলেই।
ধরুন ভয়ানক আগুন লেগেছে একটি বাড়িতে! দাউদাউ করে ছড়িয়ে পড়ছে সেই আগুন। সেই আগুনের মধ্যে আটকে গেছেন আপনার মা আর বান্ধবী। আপনি তখন সেই অবস্থায় কাকে বাঁচাবেন? অবাক করা এমন উদ্ভট প্রশ্ন করা হয়েছে বেইজিংয়ের এক আইন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। আইন পরীক্ষায় আরও জানতে চাওয়া হয়, ডিভোর্স হওয়ার আগে সেপারেশন পিরিয়ডে কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর প্রাণ না বাঁচান, তাহলে কি তাকে অপরাধ বলা যাবে?
এমন সব প্রশ্নের প্যাঁচে পড়েই মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা হলো হাজার হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও বিচারকদের! অথচ ওই প্রশ্নটার সঠিক জবাব দিতে না পারলে চীনে তাদের আইন অনুশীলনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে!
মূল আগুন-সংক্রান্ত প্রশ্নটা ছিল এমন— একজন পুরুষ যদি এ রকম পরিস্থিতিতে তার মাকে বাঁচাতে সক্ষম হলেও যদি বেছে নেন বান্ধবীকে, তাহলে কি তাকে ‘ক্রাইম অব নন-অ্যাকশন’-এর দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে?
এমন উদ্ভট প্রশ্ন নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলো ব্যাপক লেখালেখি শুরু করেছে। প্রচার মাধ্যমে অনেক প্রশ্ন রাখার পর সম্প্রতি চীনের আইন মন্ত্রণালয় প্রশ্নগুলোর উত্তরপত্রও প্রকাশ করেছে। তাতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, মায়ের বদলে যদি বান্ধবীকে বেছে নেন তাহলে আইনের চোখে দোষী সাব্যস্ত হবেন সেই ব্যক্তি! কেনো না, চীনের আইনে লেখা রয়েছে, ছেলে সব সময়েই তার মায়ের প্রতি দায়বদ্ধ- তবে বান্ধবীর প্রতি নয়।
আইন যা-ই বলুক না কেনো, উত্তরপত্র প্রকাশ্যে আসার পরে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে চীনে। বেশির ভাগ মানুষ বলছেন যে, ছেলে তো মায়ের প্রতি দায়বদ্ধ সব সময়ই হবে- তার জন্য আইন প্রণয়নের প্রয়োজন কেনো? একজন মা সন্তানকে ছোট হতে বড় করেন, সেই ঋণ তো আর কোনো পুরুষের বান্ধবীর প্রতি থাকতে পারে না! আর তারপর বয়স কম হওয়ার কারণে বান্ধবী প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা নিজে থেকেই করতে পারেন! কিন্তু বৃদ্ধা মায়ের পক্ষে সেটি সম্ভব না-ও হতে পারে!
অপরদিকে বান্ধবীদের দাবি, আইনের চোখে সকলের প্রাণের মূল্যই সমান হওয়া উচিত! আইনের কাজই হলো সবাইকে সমান ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। আর তাই একজনের প্রাণ বাঁচালে সেটা অপরাধ নয়, অন্যের বাঁচালে অপরাধ— এমন আইনের কোনো অর্থই থাকতে পারে না! আইন যদি সবার জন্য সমান হয় তাহলে এমন আইন কেনো? এমন প্রশ্ন অনেকের।