দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার আবিষ্কৃত হলো ১ লাখ ১০ হাজার বছর পূর্বের দাঁত! সাইবেরিয়ার একটি গুহায় বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন প্রাচীন আমলের একটি দাঁত।
প্রাচীন আমলের এই দাঁত অনেকটা মানুষের দাঁতের মতোই দেখতে। এই দাঁত পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, হোমিনিনায়ি প্রাণী গোত্রের শ্রেণীভুক্ত হোমিনিনের দাঁত এটি। ধারণা করা হচ্ছে, প্রাচীন যুগে মানুষের পাশাপাশি হোমিনিন বাস করতো। প্রোসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর পূর্বে ২০০৮ সালে একই গুহায় ছোট্ট একটি আঙ্গুলের হাড় পাওয়া যায়। ২০১০ সালের দিকে রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের একটি দল আঙ্গুলের ওই হাড়টিকেও হোমিনিনের বলে জানিয়েছিলেন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, ডেনিসোভা নামের গুহায় ওই দাঁতটি পাওয়া গেছে বলে প্রাণীটিকে বিজ্ঞানীরা ডেনিসোভা নাম রেখেছেন। খুঁজে পাওয়া এই দাঁতটিকে নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা জানিয়েছেন, ধারণা করা হতো, এই প্রাণীদের আদি পুরুষদের আগমন ঘটেছিল অন্তত ৪০ হতে ৭০ লাখ বছর আগে। কিন্তু এই ধারণা ভুল বলেই মনে হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সময়ের আরও ৬০ হাজার বছর আগেই বিচরণ করতো এরা। হোমো সেপিয়ানদের মতো এই প্রাণীগুলো ছিল আদি পুরুষ। এরা অনেকটা মানুষের মতোই। এরা ডেনিসোভান কিংবা নিয়ানডারথালদের খুব কাছাকাছি।
দাঁতটির নাম দেওয়া হয়েছে ডেনিসোভা ৮। হোমিনিনের দাঁত হিসেবে বেশ বড় আকারের এটি। এ দাঁতের শেকড় বিস্ময়করভাবে দীর্ঘ। দেখে মনে হচ্ছে, এই দাঁতটি যে প্রাণীর তার চোয়াল অনেক বড় আকৃতির ছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটিমাত্র দাঁত কিংবা হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটি প্রাণী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করা একটি কঠিন বিষয়। তাই এই ডেনিসোভান আসলে দেখতে কেমন তা এখনও পরিষ্কার নয়। এই দাঁতটি ১ লাখ ১০ হাজার বছর আগের বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সম্ভবত এরা সাইবেরিয়া অঞ্চলে বাস করতো বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
দাঁতটি নিয়ে গবেষণা করছেন ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর পেলিয়ানথ্রোপোলজিস্ট বেন্স ভায়োলা। গবেষকদের ধারণা, এই প্রাণীগুলোর খুব কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকার শক্তি-সামর্থ্য ছিল।
নিয়ানডারথালদের ডিএনএর বৈচিত্র্যের সঙ্গে মিল দেখা যায় আধুনিক ইউরোপিয়ানদের ডিএনএ-তে। ভায়োলার মতে, ডেনিসোভানের ডিএনএ ইউরোপিয়ানদের অনেক কাছাকাছি। ফিজি কিংবা পাপুয়া নিউ গিনির কাছাকাছি মেলানেসিয়ানদের ডিএনএ ডেনিসোভানের ৫ শতাংশ জিন ধারণ করছে বলে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির প্রতিবেদনে মত দেওয়া হয়েছে।
তবে এই প্রাণটি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেতে হলে এই প্রাণীর ফসিল খুঁজে পাওয়া জরুরি বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর কেবল তখনই এই বিলুপ্ত প্রাণীটির বিস্ময়কর আরও অনেক ইতিহাস বেরিয়ে আসবে।