দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইট-পাথর খাওয়া মানুষ আমরা আগেও দেখেছি। কিন্তু এমন ছোট্ট একটি শিশু এমন কাজ করতে পারে তা কেও কল্পনাও করতে পারেনি। এই শিশুর নাম ম্যাডি। সে কার্পেট, পাথরসহ সবকিছু খেয়ে ফেলে!
ফুটফুটে শিশু ম্যাডি মুর। বয়স মাত্র ৩ বছর। অন্য শিশুদের মতো বেড়ে উঠলেও অদ্ভুত এক রোগ ‘পিকা’ তে আক্রান্ত এই শিশু ম্যাডি মুর। মজার মজার খাবার খেয়ে তার ক্ষুধা মেটেনা বরং অখাদ্য-কুখাদ্যে তার আগ্রহ আরও বেশি! সে বাড়ির কার্পেট হতে শুরু করে রং পর্যন্ত গিলে ফেলে গো-গ্রাসে!
ম্যাডি মুরের খাদ্য তালিকায় রয়েছে- ওয়াশিং পাউডার, রান্নার তেল, কার্পেটের আঁশ, পাথর, প্লাস্টার, প্লাস্টিক, কাঠ, বালি, টেপ, পোকা-মাকড়, রং, কলম এবং টয়লেট টিস্যুও রয়েছে তার খাদ্য তালিকায়।
অদ্ভুত এক রোগ ‘পিকা’ এমন এক ইমপালসিভ ডিসঅর্ডার, যার কারণে ক্ষুধা মেটাতে খাবার নয়, বরং অন্য জিনিসের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন বাছ-বিচার থাকেনা।
এই শিশুটিকে বর্তমানে পর্যবেক্ষণ করছে চিলড্রেনস সেন্টার। এরা ম্যাডির জন্যে খাওয়ার যোগ্য এমন পুতুলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এতে অন্তত সে নিরাপদে প্লাস্টিক কিংবা রাবারের পুতুল খেতে পারবে।
শিশুর এমন একটি রোগ থাকায় তার মা ক্যাথিরিন মুলিনসকে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। মেয়ে যেনো ক্ষতিকর কিছু খেয়ে না ফেলে সেদিকে খেয়ার রাখেন তিনি। তিনি বলেন, আমার মেয়ের সমস্যাটি একটি বিরল সমস্যা। যে সব বিশেষজ্ঞ তাকে দেখেছেন, সবাই বলেছেন, এমন রোগ এর আগে কেও কখনও দেখেননি। আমার মেয়েটি সবকিছু খায়। মাথায় দুশ্চিন্তা থাকে, পরেরবার ও কি খেতে চলেছে সে চিন্তায়। এক মিনিটের জন্যেও ওকে চোখের আড়াল করা যায় না। ও একের পর এক কিছু না কিছু খেয়েই চলেছে। বাবা সনি মুরকেও সব সময় সাবধান থাকতে হয়। এই পরিবারটি ইংল্যান্ডের ডোরসেটের বর্নমাউথে দুই বেডরুমের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন।
ম্যাডির মা বিষয়টি ওর এক বছর পূরণ না হতেই খেয়াল করেন। মেয়েটি আজেবাজে জিনিস মুখে পুরে নেয়। প্রথমে ভেবেছিলেন ছোট শিশুরাতো কতোকিছুই না মুখে দেয়। তবে আস্তে আস্তে বয়স বাড়লেও তার অভ্যাস গেলো না। তখন তিনি বুঝতে পারলেন এটি তার বড় সমস্যা। তাই তিনি চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হলেন। চিকিৎসকরা টানা ২ বছর ওকে নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালেন। পরে চিকিৎসকরা জানালেন, ম্যাডি ‘পিকা’ নামক এক রোগে আক্রান্ত।