দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আদিযুগে পৃথিবীতে অনেক ঘটনায় ঘটতো। এখন এই আধুনিক যুগেও গতবাধা নিয়ম অনুযায়ী নিকট আত্মীয় অর্থাৎ বোনকে বিয়ের রেওয়াজ রয়েছে। এই সভ্য যুগেও নাকি এমন বিদঘুটে নিয়মে বিয়ে হয়!
আমাদের তথাকথিত আধুনিক সমাজেও মায়ের পেটের না হলেও ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ের বিষয়টি প্রায়শই শোনা যায়। চাচাতো, খালাতো, মামাতো এ রকম কতো রকমের বোনকেই বিয়ের রেওয়াজ আমাদের রয়েছে। এগুলো নিয়ে ধর্মেও বিধি-নিষেধ নেই। কিন্তু এই টোটো নামক জাতির মধ্যে বিয়ের নিয়ম এক আজবভাবে। বিয়ে ছাড়াই কাটে এক বছর!
এমন ঘটনা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের। সেখানে অবশ্য বিয়ের আগে নাকি এক বছর সংসার করতে হয়। তারপর পছন্দ না হলে বোনকে ছেড়েও দেওয়া যায়, এমন রেওয়াজ রয়েছে। এই একবছরের মধ্যে যদি সন্তানের জন্ম হয়েও যায়, তাহলেও বোনকে ছেড়ে দেওয়া যায় এমন রীতি রয়েছে। তবে নিয়ম মাফিক এরজন্য ভাইকে করতে হয় প্রায়শ্চিত্ত। এমন সব আজব নিয়ম এখনও বিদ্যমান রয়েছে টোটো নামে ভারতের এক জনজাতির মধ্যে।
বলা হয়েছে, পৃথিবীর সবচেয়ে ছোটো জনজাতি হলো এই টোটো। তাদের মধ্যেই এই বিয়ের প্রাচীন নিয়ম বর্তমানেও বিদ্যমান। কিন্তু টোটোদের জনসংখ্যা কমতে কমতে বর্তমানে তলানিতে ঠেকেছে। বর্তমানে টোটোদের জনসংখ্যা মাত্র ১,৫৭৪ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৮১৯ ও মহিলা ৭৫৫ জন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার মাদারিহাট ব্লকের টোটোপাড়ায় এই টোটো জনজাতির বসবাস। টোটোদের মধ্যে শিক্ষিতের হার খুবই কম। সে কারণেই নাকি তাদের মধ্যে প্রাচীন এই প্রথাটি চলে আসছে এখনও। টোটোদের নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন মেয়েকেই কেবল বিয়ে করতে হয় যুবকদের!
সেই বিয়ের নিয়ম কেমন?
কোনও টোটো যুবক রাতের অন্ধকারে তার আত্মীয় অর্থাৎ মামার মেয়ে কিংবা পিসির মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে চলে আসেন নিজের ঘরে। তারপর মেয়েটির অর্থাৎ সেই বোনের বাড়িতে খবর দেওয়া হয় যে, তাদের মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছেন। এরপর এক বছর মেয়েটির সঙ্গে ঘর-সংসার করার পর যদি যুবকের মেয়েটিকে পছন্দ না হয় কিংবা এক বছর সংসার করার পর যদি মেয়েটির সন্তান হয়, তাহলেও মেয়েটিকে ইচ্ছে করলে ছেড়ে দিতে পারেন ওই যুবক। এরপর মেয়েটিকে আবার বাপের বাড়ি চলে যেতে হবে। ওই যুবককে প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় পশুবলির মাধ্যমে।
টোটো কল্যাণ সমিতির প্রধান গোকুল টোটো বলেছেন, ‘ইদানিং নিয়মটি বদলাচ্ছে। যারা লেখাপড়া শিখছেন তাদের অনেকেই এখন এই রীতি মানছেন না। ভিন জাতিতে বিয়ের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে।’