দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান হতে ভারতে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেশটির লোকসভায় শেষ পর্যন্ত আটকে গেছে।
লোকসভার চলতি অধিবেশনে এই সংক্রান্ত একটি বিল পাস হওয়ার কথা ছিল। তবে কংগ্রেসসহ দলগুলোর বিরোধিতায় প্রস্তাবটি তুলতেই পারেনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার।
১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান হতে ভারতে চলে আসা প্রায় ৩০ হাজার হিন্দু শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল।
এক প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান হতে ভারতে চলে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন এবং পার্সিদের অনুপ্রবেশকারী বলা যাবে না। শরণার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করায় তারা দেশের পূর্ণ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভারতের লোকসভার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কেন্দ্রীয় সংসদবিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, এই অধিবেশনে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং নাগরিকত্ব আইন সংশোধন বিল পাস করতে চান। তবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ বাম এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এতে প্রবল আপত্তি জানায়।
এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সংসদের রাজ্যসভার কক্ষে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ বলেছেন, এই ধরনের আইন কোনোভাবেই ভারতে কার্যকর হতে পারে না। কারণ হলো, সংবিধান অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কোনো মুসলিম শরণার্থী যদি ভারতে এসে আশ্রয় নিতে চান তাহলে কেনো তাকে বঞ্চিত করা হবে? এ ধরনের আইন ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিভাজনের প্রমাণ দেবে।
ভারতের লোকসভায় কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির সংখ্যগরিষ্ঠতা হলেও প্রকৃতপক্ষে রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু বিজেপি। যে কারণে কোনো বিলের ক্ষেত্রে লোকসভায় পাস হলেও রাজ্যসভায় বিরোধীদের সম্মতি না পেলে সেই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত আইনে পরিণত করা সম্ভব হবে না।
জানা যায়, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান হতে ভারতে চলে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব বিলের পাশাপাশি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পাকিস্তান ও বাংলাদেশীদের সম্পত্তি শত্রু আইনের মাধ্যমে অধিগ্রহণের যে প্রস্তাব পাস করাতে চেয়েছিল, সেটিও এখন করা যাচ্ছে না।