দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে জাহাজ ও বিমান উধাও হয়ে যাওয়ার কাহিনী আমাদের অনেকের জানা। কিন্তু কেনো এমনটি হয়? এবার সেই নেপথ্য রহস্য উদঘাটন হয়েছে!
দীর্ঘকাল ধরে যে রহস্য বিদ্যমান ছিলো, সেই রহস্য উদঘাটন করতে এবার খোদ বিজ্ঞানীরাই এগিয়ে এসেছেন। এই রহস্য ভেদ করার লক্ষ্যে এক নতুন তত্ত¡ দাঁড় করিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আটলান্টিক মহাসাগরে প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে বিস্তৃত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় অঞ্চল। বলা হয়ে থাকে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫টি এরোপ্লেন ও একশোর বেশি জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেছে। তাই এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নানা কল্পনা দানা বেঁধেছে বিভিন্ন সময়।
কেও বলেছেন, ওই অঞ্চলে প্রকৃতপক্ষে বাসা বেঁধে রয়েছে ভিনগ্রহের প্রাণীরা। আবার কেও মনে করেছেন, আটলান্টিকের গভীরে রয়ে গেছে কোনও লুপ্ত সাম্রাজ্য। অথচ বলা বাহুল্য, এই সমস্ত তত্তে¡র একটিও বিজ্ঞানসম্মত নয়। তবে এবার বিজ্ঞানীরাই এই রহস্য ভেদ করার লক্ষ্যে এক নতুন তত্ত¡ দাঁড় করিয়েছেন।
এবার একদল বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে মনে করছেন, এই অঞ্চলে স্থায়ী হয়ে থাকা একটি ষড়ভুজাকার মেঘস্তরই জাহাজ ও এরোপ্লেন লোপাট হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ক্রিয়াশীল। বিজ্ঞানীদের দাবি হলো, এই ষড়ভুজাকার মেঘস্তর ‘এয়ার বম্ব’ তৈরি করে। যে কারণে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের আবহাওয়া সবসময় অত্যন্ত খারাপ হয়ে থাকে। মূলত এই খারাপ আবহাওয়ার শিকার হয়েই পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে জাহাজ ও এরোপ্লেন। শেষমেষ সেটি ভেঙে পড়ে তলিয়ে যায় সমুদ্র গর্ভে।
বিজ্ঞানীদলের অন্তর্ভূক্ত আবহাওয়াবিদ র্যান্ডি সারভেনি সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এই ধরনের এয়ার বম্ব আসলে মাইক্রোবার্স্ট নামের উপাদান নিয়ে গড়ে ওঠে থাকে। এর প্রভাবে মেঘ হতে প্রবল বেগে নীচের দিকে হাওয়া নেমে আসে। এই হাওয়ার বেগ ১৭০ মাইল প্রতি ঘণ্টার কাছাকাছি হতে পারে। এই তীব্রগতিসম্পন্ন হাওয়া নীচে নেমে এসে এক সময় সমুদ্রপৃষ্ঠে ধাক্কা খেয়ে চতুর্দিকে ছিটকে পড়ে। যে কারণে তীব্র গতির হাওয়ার একটি আবর্ত তৈরি হয়ে থাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে। এই আবর্তেরই শিকার হয় জাহাজ এবং এরোপ্লেনগুলি। নাসার উপগ্রহ চিত্রে নাকি এই ছ’কোণা মেঘস্তরের ছবিও ধরা পড়েছে বলে দাবি সারভেনির।
বিজ্ঞানীরা ইতিপূর্বেও বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ বছরের মার্চ মাসে একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে দেড়শো ফুট সমুদ্রগর্ভে নিহিত ও প্রায় দেড় মাইল বিস্তৃত একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ হতে ক্রমাগত যে বিস্ফোরণ ঘটে তার প্রভাবেই এরোপ্লেন এবং জাহাজ এই অঞ্চল পার হতে গিয়ে একেবারে ধ্বংসের মুখে পড়ে।
তবে এবার সারভেনি ও তাঁর সঙ্গীরা অন্য রকম তত্ত¡ উপস্থাপন করলেন। এই তত্ত্বের কতোটা যৌক্তিক ভিত্তি আছে, সেটিই দেখার বিষয়। সবার মনে একই প্রশ্ন, তাহলে কী সত্যিই এতোবছরের রহস্যের ভেদ হতে চলেছে?