দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০১৭ সালের মধ্যে হাতির দাঁত বেচা-কেনা কিংবা হাতির দাঁত হতে পণ্য তৈরি করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।
এমন খবরে সংরক্ষণবাদীরা এই পদক্ষেপকে হাতিদের জন্য সুখবর হিসেবেই বর্ণনা করেছেন। চীন সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনে হাতির দাঁত নিয়ে যাবতীয় অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হবে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, আফ্রিকায় ব্যাপক এবং বেপরোয়া হাতি নিধন রোধ করা।
চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক সরকারি বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ”৩৪টি সংস্থা, যারা হাতির দাঁত নিয়ে কাজ করে এবং ১৪৩টি হাতির দাঁত কেনা-বেচার বাজার” এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। তারমধ্যে বেশ কয়েক ডজন সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। এই ডেডলাইনের পূর্বেই আইন শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ হাতির দাঁতের সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থাকবে”।
বেইজিং গত বছর মার্চ মাসে ঘোষণা করে, ১৯৭৫ সালের পূর্বে সংগৃহীত যাবতীয় হাতির দাঁতের পণ্যের আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারিত করা হবে। ১৯৭৫ সালে বন্য প্রাণীদের মাত্রাধিক শিকার এবং ব্যবহার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি কার্যকর হয়। বন্য প্রাণী এবং উদ্ভিদের বিপন্ন প্রজাতিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি সিআইটিইএস অর্থাৎ ‘সাইটস’ হাতির দাঁতের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেছিলো ১৯৮৯ সালে।
চীন সরকার ঘোষণা করেছে, বৈধ উৎস হতে পুরনো হাতির দাঁতের জিনিসপত্র নিলাম করা চলবে, কনোনা হাতির দাঁত খোদাই চীনের একটি প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। চীনে অনেকেই সুন্দরভাবে খোদাই করা হাতির দাঁতের ‘অ্যান্টিক’ সংগ্রহ করে।
সংরক্ষণবাদীরা এতোদিন চীনকেই হাতির দাঁত নিয়ে বিশ্বব্যাপী অবৈধ বাণিজ্যের ‘বৃহত্তম বাজার’ বলে গণ্য করে এসেছে।
কাজেই নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সমিতি ডাবলিউসিএস-এর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এইলি কাং এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, চীনের এই পদক্ষেপ ”হাতির দাঁতের সবচেয়ে বড় বাজার বন্ধ করে দেবে। আমি গর্বিত এই জন্য যে, আমার দেশ এই নেতৃত্ব দেখিয়েছে, যে কারণে হাতিরা বিলুপ্ত না হওয়ার একটা ভালো সুযোগ পাবে।”
কাং আরও বলেন, ”চীনের ঘোষণা আফ্রিকার হাতিদের জন্যে একটি গেম-চেঞ্জার”, অর্থাৎ পুরো পরিস্থিতি বদলে দিবে। গতবছরও আফ্রিকায় শুধু দাঁতের জন্য ২০ হাজারেরও বেশি হাতি মারা হয়েছে বলে পশু অধিকার কর্মীরা অনুমান করছেন।