দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাড়ির পাশেই গ্যারেজ, ভাবছেন সেই গ্যারেজে নিশ্চয়ই সুন্দর একখানা গাড়ি আছে। কিন্তু না সেখানে গাড়ি নেই, রয়েছে এরোপ্লেন!
তবে ভাববার কারণ নেই। ভাবছেন এটি হয়তো গল্প, কিন্তু আসলে তা নয়, পৃথিবীর বুকে এমন শহরও রয়েছে যেখানে বাড়িতে বাড়িতে গ্যারেজ নয়, রয়েছে এরোপ্লেন রাখার হ্যাঙ্গার, সেখানেই শোভা পাচ্ছে ব্যক্তিগত প্লেন!
আমেরিকার ফ্লোরিডার স্প্রুস ক্রিক শহর। যেখানে অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছে অন্তত একটি করে এরোপ্লেন। ৫০০০ জনের মতো বাসিন্দা থাকেন এই শহরটিতে। এখানে রয়েছে ১৩০০-র মতো বাড়ি। ৭০০টির মতো এরোপ্লেন রয়েছে এই শহরে। এই শহরটিতে রয়েছে ৪০০০ ফুট লম্বা ও ৫০০ ফুট চওড়া একটি রানওয়ে, যেখানে দৌঁড় দিয়ে আকাশে উড়ে যেতে পারে বাসিন্দাদের এরোপ্লেনগুলো। সেইসঙ্গে এই শহরে রয়েছে বেশ কিছু এয়ারক্লাব, এরোপ্লেন ভাড়া দেওয়ার সংস্থা, ফ্লাইট ট্রেনিং শেখানোর বন্দোবস্ত ও ২৪ ঘণ্টার কড়া সিকিউরিটি ব্যবস্থাও।
অনেক নামীদামি লোক বিভিন্ন সময় বসবাস করেছেন স্প্রুস ক্রিকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন হলিউড অভিনেতা জন ট্র্যাভোল্টা। তবে তার বোয়িং ৭০৭-এর ইঞ্জিনের গর্জন এতোটাই বেশি ছিলো যে, প্রতিবেশীদের অভিযোগের ধাক্কায় তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয় শেষ পর্যন্ত!
স্প্রুস ক্রিকের বাড়িতে বাড়িতে দেখা যাবে বিচিত্র সব এরোপ্লেন। বোয়িং তো রয়েছেই, পাশাপাশি কেসনাস, পাইপার্স, পি-৫১ মাস্টাং, ফরাসি ফগ ম্যাজিস্টার বা রাশিয়ান মিগ-১৫ এর মতো প্লেনও দেখা যাবে বাড়িগুলির লাগোয়া হ্যাঙ্গারগুলোতে।
প্রশ্ন আসতে পারে পারে, কীভাবে একটি এলাকার প্রায় প্রত্যেকটি বাসিন্দা এরোপ্লেনের মালিক হতে পারেন? তাহলে কী এটিই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শহর? আসলে, যারা ব্যক্তিগত প্লেনে যাতায়াত করার মতো বিত্তের অধিকারী, কেবল তারাই নানা সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে থাকতে আসেন এই ছোট্ট শহর স্প্রুস ক্রিকে। আবার তাদের মধ্যে অধিকাংশই পেশাদার পাইলট।
এ ছাড়াও রয়েছেন চিকিৎসক, আইনজীবী বা জমি কেনাবেচার ব্যবসায়ীও। প্রত্যেক রবিবার স্থানীয় বাসিন্দারা স্থানীয় রানওয়েটির কাছে যার যার প্লেন নিয়ে সমবেত হন। তারপর ছোট ছোট দল বেঁধে উড়ে যান নিকটবর্তী এয়ারপোর্টটিতে প্রাতঃরাশ সারতে! এই জনপ্রিয় ঐতিহ্যটি এখানকার বাসিন্দাদের কাছে ‘স্যাটারডে মর্নিং গ্যাগেল’ নামেও পরিচিত। তাহলে আর কী! আপনার যদি অঢাল অর্থ-কড়ি থাকে, তাহলে আপনিও চলে যেতে পারেন স্প্রুস ক্রিক শহরটিতে। সেখানে গিয়ে বিমান চালানো শিখে নিতে পারেন। আর নিজের স্বাধীন মতো চালাতেও পারেন!