দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনাকে যদি প্রশ্ন করা যায়, শহরে গাড়িহীন জীবনযাত্রা কী কখনও সম্ভব? আপনি হয়তো উত্তর দেবেন কখনও সম্ভব নয়। কারণ তাহলে শহরে মানুষ কীভাবে চলাফেরা করবে?
আমাদের গাড়িহীন শহরের কথা কখনও ভাবা বোধহয় সম্ভব নয়। তবে জার্মানির মতো গাড়ি-পাগল দেশেও কোলন নামক শহরে একটি এলাকায় গাড়ির প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে! এর কারণ হলো দেশটির বড় শহরে গাড়ি চলাচল সীমিত করতে নানা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। শহরটির নিপেস এলাকাই সবচেয়ে বড় গাড়ি-বর্জিত এলাকা হিসেবে পরিচিত!
গাড়ি তৈরিতে যে দেশ বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে সেই জার্মানির মতো গাড়ি-পাগল দেশের জন্য প্রায় বিপ্লবের মতো ঘটনা বলা যায়। যে কারণে শিশুরা পথের উপর খেলছে, কোনো ভয়-ভীতি ছাড়াই দিব্যি ঘোরাফেরা করছে, পার্কিং-এর বদলে রয়েছে খেলার জায়গা! এই শহরের মানুষদের ঠেলাগাড়ি নিয়ে বাজার করতে যেতে হয়! তবে সারা সপ্তাহের বাজার একসঙ্গে তাতে ধরে না। তাই প্রায় প্রতিদিনই পাড়ার দোকানে তাজা পণ্য কেনেন এলাকার মানুষ!
ওই এলাকার জনৈক ইংগা বলেছেন, ‘আমার কাছে বেশি কঠিন মনে হয়নি। সাইকেল চালিয়ে ঘুরি, পিঠে রাকসাকও থাকে, বাজার তার মধ্যেই ধরে। সাইকেলে ঝুড়িও রয়েছে। তবে পানীয়র বোতলের মতো বড় কিছু থাকলে ঠেলাগাড়ি ধার নিতে হয়।’
ড. ক্রিস্টিয়ান পিলার জার্মান এয়ারোস্পেস সংস্থা ডিএলআর-এ পরিবহণ সংক্রান্ত গবেষণা বিভাগের প্রধান। জার্মানির বাকি শহরগুলোর মতো কোলনও গাড়ির উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। তার মতে, এই অবস্থার পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। কীভাবে সেটি সম্ভব? ড. পিলার বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, কোলনের মতো শহরের জন্য সোনার ডিম দেওয়া মুরগি কিন্তু নেই। অর্থাৎ একটি চাবিকাঠি পাওয়া সম্ভব নয়, একাধিক পদক্ষেপ নিতে হবে। নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে হবে। গণপরিবহণ কাঠামো ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। সেইসঙ্গে সাইকেল এবং পথচারীদের জন্য আরও অনেক ব্যবস্থা করতে হবে।’
তবুও এলাকার মানুষ ঠিকই চলছে। সাময়িক কিছু সমস্যা থাকলেও গাড়ি ছাড়া তারা দিব্যি দিন পার করছেন। সেজন্য সেখানকার পরিবেশ দূষণমুক্ত, শব্দমুক্ত। এমন একটি পরিবেশ সকলেরই কামনা থাকতে পারে এবং সেটিই বোধহয় স্বাভাবিক।