দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্ব ফুটবলে আবারও মাত করলো রোনালদো। তাঁর ইতিহাস গড়া হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে সেমিতে চলে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। যেনো একেবারে মোক্ষম সময় জ্বলে উঠলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।
পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের হ্যাটট্রিকে অতিরিক্ত সময় গড়ানো কোয়ার্টার-ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠলো রিয়াল মাদ্রিদ।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের ফিরতি পর্বের এই ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শততম গোলের মাইলফলকে পৌঁছে গেছেন রোনালদো।
বায়ার্নের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল জিদানের দল। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে নির্ধারিত সময়ের খেলায় জার্মান চ্যাম্পিয়নরা ২-১ গোলে এগিয়ে থাকার কারণে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে পারেনি, এর আগেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় কার্লো আনচেলত্তির দল। রোনালদোর আরও দুই গোল ও মার্কো আসেনসিওর লক্ষ্যভেদে শেষ পর্যন্ত দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ ব্যবধানে শেষ চারে উঠে আসে রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি হতে রবের্ত লেভানদোভস্কির গোলে এগিয়ে যায় অতিথিরা। রোনালদো সমতা ফেরানোর পর সের্হিও রামোসের আত্মঘাতী গোলে আবারও পিছিয়ে যায় রিয়াল। তখন খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই রোনালদোর ইতিহাস গড়া হ্যাটট্রিক।
শুরু হতে বায়ার্ন বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ করলেও প্রতিবারই শেষ মুহূর্তে খেই হারিয়ে ফেলে রবের্ত লেভানদোভস্কি-আরিয়েন রবেনরা। বিরতির আগে তারা মোট ৮টি শট নেয়; কিন্তু তার কোনোটিই ছিল না লক্ষ্যের মধ্যে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে জ্বলে ওঠে অতিথিরা। ৫০তম মিনিটে রবেনের শট গোললাইন হতে হেডে ফিরিয়ে রিয়ালকে বাঁচান মার্সেলো।
শুরু হতে নিজেকে তেমনভাবে মেলে ধরতে না পারা বেনজেমাকে ৬৪তম মিনিটে তুলে নেন জিদান, পরিবর্তে নামান মার্কো আসেনসিওকে।
৭৬তম মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল মাদ্রিদ। ডান দিক হতে কাসেমিরোর ক্রসে হেড করে বল জালে পাঠিয়ে দেন রোনালদো।
স্বাগতিকদের সমতায় ফেরার স্বস্তি কিন্তু এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি। ৩৬ সেকেন্ড পরেই আত্মঘাতী গোল খেয়ে বসেন তারা। ডি-বক্সের মধ্যে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়েই রামোসের পায়ের টোকায় বল চলে যায় গোললাইন পেরিয়ে।
অপরদিকে খেলার ৮৪ মিনিটে আসেনসিওকে ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ভিদাল।
তবেঅতিরিক্ত সময়ের অষ্টম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন দগলাস কস্তা। তবে তার কোণাকুনিভাবে শর্ট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আসেনসিওর নীচু কোণাকুনি শর্ট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকান নয়ার।
এর ঠিক কিছুক্ষণ পরেই ফের কাঙ্ক্ষিত সমতাসূচক গোল পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ১০৪তম মিনিটে রামোসের উঁচু করে বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে নীচু হাফ-ভলিতে জালে পাঠিয়ে দেন রোনালদো। অফসাইডের আবেদন করে বায়ার্নের খেলোয়াড়রা; তবে সে সময় রেফারি গোলের বাঁশি বাজান। টিভি রিপ্লেতেও দেখা যায়, ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই গোল করার আগে অফসাইডে ছিলেন রোনালদো।
এর ঠিক ৫ মিনিট পরেই হ্যাটট্রিক করেন রোনালদো। দুজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া মার্সেলোর নিজে গোলের চেষ্টা না করে রোনালদোকে পাস দিয়েছিলেন ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা এই সতীর্থকে। এবারের আসরে রোনালদোর এটি সপ্তম এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০০তম গোল ছিলো।
এর ঠিক তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়িয়ে সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন আসেনসিও। ডি-বক্সের মধ্যে হতে নীচু কোণাকুনি শর্টে লক্ষ্যভেদ করেন স্পেনের এই মিডফিল্ডার।