দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। ধনসম্পদ থাকার পরও আপনি যদি অসুস্থ থাকেন, টেনশন, আতঙ্ক, ভয়, দুশ্চিন্তায় সবসময় আচ্ছন্ন থাকেন- তাহলে এ সবকিছুই অর্থহীন। তাই, ‘চাই সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন।’
প্রশ্ন আসতে পারে সুস্থ দেহ আর প্রশান্ত মন রাখবো কিভাবে। আর তাছাড়া এখন প্রশ্ন হল আমরা অসুস্থ হই কেন? এ প্রসঙ্গে পৃথিবীর বিখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক ডা. হার্বার্ট বেনসন, ডা. ডিন অরনিশ, ডা. দীপক চোপড়া, ডা. ল্যারি ডসি, ডা. জন রবিন্স বলেছেন- আধুনিক মানুষের অধিকাংশ রোগই হল সাইকোসোমাটিক বা মনোদৈহিক।
প্রফেসর ডা. হার্বার্ট বেনসন, হার্ভার্ডের মাইন্ড বডি মেডিক্যাল ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা, মেডিটেশনের নিরাময় ক্ষমতা নিয়ে যিনি দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন। তিনি মনে করেন, যেসব কারণে মানুষ ডাক্তারের কাছে যায় তার ৬০-৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী হল স্ট্রেস ও অন্যান্য মানসিক চাপ যা কোনও ওষুধ দিয়ে বা অপারেশনের মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব নয়। আসলে সুখের অভাবই হল অসুখ। মনে সুখের অভাব হলেই তার প্রভাব পড়ে দেহে। মনের দুঃখ-কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশা, গ্লানি জমে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অসুখরূপে প্রকাশ পায়। মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, ব্যাকপেইন, বাতব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, এজমাসহ অধিকাংশ ক্রনিক রোগের কারণই তাই। যদি আমরা মন প্রশান্ত রাখতে পারি, প্রফুল্ল থাকতে পারি, আনন্দ প্রশান্তির সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারি তাহলে সুস্থ থাকা সম্ভব।
কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে অল্পতেই রেগে যাই আমরা। উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা ছাড়া কোনও একটি দিনও আমরা কাটাতে পারি না। নিজেকে নিয়ে একটু ভাবলে বুঝতে পারব আতংক, হতাশা আর হয়রানির যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী। ক্রমাগত এসব যন্ত্রণা আমাদের মনের ভেতর জট পাকাতে থাকে। ফলাফল অসুস্থতা। এভাবেই জন্ম নেয় অনেক রোগ। নিজের উদ্যোগে এ রোগগুলো থেকে মুক্তি সম্ভব। মানুষের শরীর হল সেরা ফার্মেসি আর মন হল সেরা ডাক্তার।
মনকে প্রশান্ত করব কীভাবে? ধ্যান বা মেডিটেশন করলে শরীর শিথিল হয়, মনে প্রশান্তি আসে, হার্টবিট ও রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়, দুশ্চিন্তা হতাশা গ্লানি টেনশন দূর হয়, মন ও শরীর লাভ করে এক অনাবিল আনন্দ ও প্রশান্তি।
বাংলাদেশে এ মেডিটেশন চর্চার পথিকৃৎ কোয়ান্টাম। মেডিটেশন করে কত বিচিত্র আর ক্রনিক ব্যাধি থেকে মুক্ত হওয়া যায় তার কোন ইয়ত্তা নেই। তাই সুস্থ জীবনের পথে আপনার প্রথম পদক্ষেপটি নিন। মেডিটেশন করুন আর প্রতিদিন শতবার মনে মনে বলুন:
‘সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন
কর্মব্যস্ত সুখী জীবন’।
দেখুন জীবন কত আনন্দের কত প্রশান্তির।
# ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ
অধ্যাপক, সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার, বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
সৌজন্যে: দৈনিক যুগান্তর।