দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাহেব বুলবুলিকে বলা হয় ‘স্বর্গীয় পাখি’। এশীয় শাবুলবুলি লাল ও সাদা দুই রঙের হয়। অপরূপ সুদর্শন বলেই হয়তো ইংরেজিতে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বর্গীয় পাখি’।
ছবি- রবিন রাজ
2015 সালে, The Asian paradise flycatcher নিম্নলিখিত তিনটি প্রজাতির মধ্যে বিভাজিত ছিল:
Indian paradise flycatcher (Terpsiphone paradisi)
Blyth’s paradise flycatcher (Terpsiphone affinis)
Amur paradise flycatcher (Terpsiphone incei)
দেখতে কিছুটা বুলবুলি পাখির মত হলেও বুলবুলির সমগোত্রীয় নয় এই পাখি। দুধরাজের নজর কাড়া বৈশিষ্ঠ্য হলো তার বিশাল লম্বা লেজ। তার লম্বা লেজ দেখার পরে যে কারো মনে হতে পারে এ পাখি উড়ে কেমন করে। অবশ্য উড়তে তার কোন রকম সমস্যাই নেই। বরং সে যখন তার লম্বা লেজ নিয়ে উড়ে বেড়ায় তখন তাকে দেখে মনে হয় স্বর্গ থেকে কয়েক দিনের জন্য বেড়াতে এসেছে পৃথিবীতে। গলা থেকে তার লেজের দৈর্ঘ্য ১৯ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। মাথায় রয়েছে মোহনীয় একটি তেল চকচকে ঝুটি। চোখে আছে নীল। যৌবনে এটি লাল আর মরিচায় আবৃত। তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাদা ও শুভ্রতায় ভরে ওঠে। এমন রং বৈচিত্র খুব কম পাখিরই দেখতে পাওয়া যায়।
ছবি- রবিন রাজ
মেয়ে দুধরাজের, ছেলে দুধ্রাজের মত লম্বা পালক থাকে না। দুধরাজ দম্পত্তি একসঙ্গেই থাকে। তার প্রধান খাদ্য পোকামাকড়। এছাড়া পোকা মাকড় ধরাতে এদের জুড়ি নেই। খুবই সাবধানের সঙ্গে উঁচু গাছের ডালে নিজেদের থাকার জন্য ঘাস, লতাপাতা, মাকড়সার জাল দিয়ে পেয়ালা আকৃতির খুব চমৎকার বাসা বানায় এরা। তাদের পছন্দের স্থান হল বাঁশঝাড়। আম-কাঁঠালের বাগানেও তাদের দেখতে পাওয়া যায়। তাদের প্রজনন মৌসুম শুরু হয় বৈশাখ মাসে। এরা ডিম দিয়ে থাকে চার থেকে পাঁচটি। বাবা-মা উভয়েই ডিমে তা দেয়। তা থেকে দুই তিনটি ছানা বড় হয়। দুধরাজকে কদাচিৎ দেখা গেলেও তাদের সংখ্যা খুব কম নয়। সারা দেশে পাওয়া গেলেও পঞ্চগড় এবং উত্তরাঞ্চলে এদের বেশি দেখতে পাওয়া যায়। দেখতে পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। ঘন ঘন ঝোপ-ঝাড় দুধরাজের পছন্দের জায়গা্র মধ্যে অন্যতম। তবে এই পাখি প্রকৃতিতে কমে যাচ্ছে দিন দিন। বাংলাদেশের এই অতিসুন্দর পাখি গুলোকে বাচিয়ে রাখতে আমাদের সবারই সচেতন হওয়া উচিত।