দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা সত্বেও আফ্রিকার দেশগুলোতে মাদাগাস্কারের দাবিকৃত ‘করোনারোধী ভেষজ পানীয়’ ব্যবহার শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই তানজানিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, লাইবেরিয়া, কঙ্গো, গিনি-বিসাউ প্রভৃতি দেশে বিনামূল্যেই হাজার হাজার বোতল পানীয় পাঠিয়েছে মাদাগাস্কার।
গত মাসে মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোলিনা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, তারা এক ধরনের পানীয় উদ্ভাবন করেছেন যা পান করলে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ইতিধ্যেই দু’জন এই পানীয় পান করে সুস্থ হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তারপর থেকেই মাদাগাস্কারের রাষ্ট্র পরিচালিত প্রতিষ্ঠান মালাগাসি ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লায়েড রিসার্চে ব্যাপক হারে ‘কোভিড-অর্গানিকস’ নামের এই পানীয় উৎপাদন শুরু হয়ে যায়। এতে মূলত আর্টেমিশিয়াসহ বেশ কিছু ভেষজ গাছের নির্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা যায। আর্টিমিশিয়া ইতিপূর্বে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে মাদাগাস্কার সরকার জানিয়েছে যে, তারা পানীয়টির দাম রাখছে ৪০ মার্কিন সেন্ট। শুধু নিজেরাই নয়, আফ্রিকার প্রতিবেশী দেশগুলোকেও এই পানীয় তারা সরবরাহ করবে।
ইতিমধ্যেই অন্তত ১৪টি আফ্রিকান দেশকে কোভিড-অর্গানিকস দেওয়া শুরু হয়েছে। গিনি-বিসাউ অন্তত ১৬ হাজার বোতল পানীয় পেয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার তানজানিয়ায় পৌঁছেছে এই ভেষজ পানীয়টি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগ প্রকাশ
আফ্রিকান দেশগুলো মাদাগাস্কার সরকারের ওপর ভরসা রেখে পরীক্ষা না করেই কোভিড-অর্গানিকস ব্যবহারের ঘোষণা দিলেও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তারা বলছেন, আর্টেমিশিয়া হতে সংগৃহীত যৌগ উপাদানগুলো ম্যালেরিয়া সারাতে কার্যকর, সরাসরি এই গাছটি ব্যবহার নয়। সেক্ষেত্রে কার্যকারিতা পরীক্ষা না করেই কোনো বস্তু বা তথাকথিত ওষুধ গ্রহণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আফ্রিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রও বলছে যে, মাদাগাস্কারের কোভিড-অর্গানিকস পরীক্ষা করার পরেই পান করতে দেওয়া উচিত ছিলো।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।