দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আবারও মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা। তবে চুক্তি এবারও হবে কিনা তা নিয়ে রয়েই গেছে প্রশ্ন। তবে মধ্যস্থতাকারীরা একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ইসরায়েল এবং হামাস।
দু’পক্ষই রাজি থাকে এমন একটি প্রস্তাব মধ্যস্থতাকারীরা এখনও দিতে পারেননি। সোমবার মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য একটি প্রস্তাব দেওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তাতে রাজি হয়ে যায়।
তবে ওই প্রস্তাবটিতে বাধ সেধেছে ইসরায়েল। কায়রোয় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচনায় উপস্থিত হয়ে ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া প্রস্তাবটির ৪টি বিষয়ে আপত্তি জানায়। যার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি করার বিষয়টি।
ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রস্তাবে যুদ্ধ অবসানের কথা বলা হয়। তবে এমন হলে নারী সেনারা অনেক দেরিতে মুক্তি পেতে পারে- এমন আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
প্রস্তাবে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে জীবিত বা মৃত যেভাবেই হোক মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ইসরায়েল চায় ৩৩ জন জিম্মিকেই জীবিত মুক্তি দিক হামাস।
এছাড়াও প্রস্তাবে হামাসের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, ইসরায়েলের জেলে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যেখানে কারও মুক্তির ক্ষেত্রে ইসরায়েলের কোনো ভেটো ক্ষমতায় থাকবে না। তবে ইসরায়েল বলছে,তারা কোনো বন্দিকেই মুক্তি দেবে বা দেবে না তা নির্ধারণ করতে তাদের ভেটো ক্ষমতাও থাকতে হবে।
প্রস্তাবে উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়া অধিবাসীদের কোনো নিরাপত্তা তল্লাশি ছাড়া অবাধে চলাফেরা করতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ইসরায়েল বলছে, হামাস বন্দুকধারীদের প্রত্যাবর্তন ঠেকানোর জন্য নিরাপত্তা তল্লাশির প্রয়োজন রয়েছে।
বিষয়গুলো নিয়ে ইসরায়েলের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে লড়াইয়ে এক সপ্তাহের বিরতির পর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় এ পর্যন্ত কোনো সমাধান বেরিয়ে আসেনি।
এই মুহূর্তে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হলে তা নভেম্বরের সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ কোনো যুদ্ধবিরতি হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org