দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তপ্রবাহের গতি শ্লথ হলে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে যেমন এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তেমনি কিছু খাবার রয়েছে যা নিয়মিত খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের হার কিছুটা হলেও উন্নত করা যেতেই পারে।
দীর্ঘক্ষণ ধরে পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে ঝিঁঝি ধরে। অনেক সময় হাতে ভর দিয়ে শুলেও এমন হয়ে থাকে। কখনও কখনও হাতে, পায়ে সুচ ফোটার মতো অনুভূতিও হতে পারে। হৃদযন্ত্র থেকে পরিস্রুত রক্ত সারা শরীরে স্বাভাবিকভাবে ছড়িয়ে না পড়লে শারীরবৃত্তীয় নানা কাজকর্ম বিঘ্নিতও হতে পারে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক মতো না হলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। রক্তপ্রবাহের গতি শ্লথ হলে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ার মতো লক্ষণও দেখা যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে যেমন এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, তেমনি বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের হারও কিছুটা হলেও উন্নত করা যাবে।
লাল রঙের ফল এবং সব্জি
খাবারের তালিকায় বেদানা, গাজর, পেঁয়াজ, বিট, লাল বেল পেপার, লাল নটে শাকের মতো সব্জি, ফল নিয়মিত খেতে পারেন। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, বেদানায় রয়েছে পরিফেলন ও নাইট্রেট। যা রক্ত সঞ্চালনের পাশাপাশি রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে। বিট, গাজরের মতো সব্জিতে নাইট্রেটের পরিমাণও বেশি। যা সহজেই নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়ে যায়। এই যৌগ শরীরের বিভিন্ন পেশির টিস্যুতে রক্তের প্রবাহ ভালো রাখে ও রক্তবাহিকাগুলোকেও আরাম দেয়।
সাইট্রাসজাতীয় ফল
মুসাম্বি, কমলা, আমলকি, আঙুরে ভিটামিন সি ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণও বেশি। এই ফলগুলো খেলে রক্তের চাপ কমে আসে। যে কারণে রক্তবাহিকায় যদি কোনওভাবে প্রদাহ হয়, সেটিও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বাদাম ও বিভিন্ন রকম বীজ
প্রতিদিন ৫টি করে কাঠবাদাম, একটি আখরোট ও বিভিন্ন ধরনের বীজ খেলেও রক্তের চাপ বশেই থাকে। এই সমস্ত খাবারে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন ই এবং ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণও বেশি। এই সমস্ত উপাদান রক্ত সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org