দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনকে দিন বায়ু দূষণ বেড়েই চলেছে, এতে করে হাঁপানির সমস্যাও দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে। কেও কেও আবার সারা বছর ধরে হাঁপানির কষ্টে ভোগেন।

কারও আবার শুধু শীত আসলেই কষ্ট বাড়ে। এ ছাড়াও সর্দি-কাশি, সাইনাসের সমস্যা থাকলে ভুগতে হয় হাঁপানির কষ্টে। হবে না কিংবা কেনো! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মতে, ভারতের প্রতি ১০ জনের ৯ জনই দূষিত বাতাসে শ্বাস গ্রহণ করেন। আজকাল বয়স্কদের পাশাপাশি বাচ্চারাও ভুগছে এই সমস্যাতে। ভারতে প্রায় ৬-১০% বাচ্চা এই ধরনের অ্যাজ়মার শিকার।
নিঃশ্বাস নিতে গেলে সমস্যা, বুকে কফ জমা, ঘন ঘন কাশি- এই ধরনের লক্ষণগুলো বাচ্চাদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। মূলত দূষিত বায়ুতে শ্বাস নেওয়ার জন্যই বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা। এই সমস্যা এড়ানোর উপায় নেই। তবে ব্যালান্স ডায়েটের মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের ফুসফুসের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারবেন। এমন বেশ কিছু খাবারও রয়েছে, যা ছোট বয়স থেকে খাওয়ার অভ্যাস করলে হাঁপানির কষ্ট কিছুটা হলেও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
ফল এবং সব্জি
আপেল, কিউই, কলা, বেদানা, লেবুজাতীয় ফল, কন্দজাতীয় সব্জি ইত্যাদি বাচ্চার ডায়েটে রাখতে হবে। তাজা ফল এবং সব্জিতে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় ও ফুসফুসকে চাঙ্গা রাখে। হাঁপানির সমস্যায় ভুগলে বাচ্চাকে নিয়মিত হলুদ, আদা, তুলসি, রসুন, আমলকি ওএবং মেথি দানা খাওয়ান।
গোটা শস্য
ওটস, ডালিয়া, কিনোয়া, মিলেটের মতো দানাশস্যও পুষ্টিতে ভরপুর হয়। এগুলো দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে ও প্রদাহ কমাতে উপযোগী।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
রুই, পমফ্রেট, ইলিশ ইত্যাদি মাছের মধ্যে পাওয়া যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এ ছাড়াও চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড এবং আখরোটেও এই পুষ্টি পাওয়া যাবে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে ও ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি এড়াতেও এটি সাহায্য করে।
লো ফ্যাট ডেয়ারি
দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য খেলে যাচাই করে নিন তাতে করে ফ্যাটের পরিমাণ যেনো কম থাকে। দুধের বদলে বাড়িতে পাতা টক দইও খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চার দেহে ইমিউনিটি বাড়বে ও প্রদাহ কমে আসবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org