দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি মানুষের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল হতে থাকে। যে কারণে তখন অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা সামাধানে কৃত্রিম অরগানিক লেন্স তৈরি করা হয়েছে। এটি আসলে কিভাবে কাজ করে তা জেনে নিন।
ইউরোপের বিজ্ঞানীরা এই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই তারা সমস্যা সামাধানে কৃত্রিম অরগানিক লেন্স তৈরি করেছেন। সমস্যা সমাধানে এই লেন্স কতোটুকু ভূমিকা রাখবে সে বিষয়টিই এখন দেখার বিষয়।
চিকিৎসকরা বলেছেন, মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘প্রেসবায়োপিয়া` নামে এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন চোখের লেন্স ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকার কারণে সবকিছু দেখতে সমস্যা হয়।
বিজ্ঞানীরা গোটা প্রক্রিয়াটি এখনও পুরোপুরিভাবে বুঝতে না পারলেও মোটামুটিভাবে বোঝা যায় যে, লেন্স তার নমনীয়তা ও দূরত্ব অনুযায়ী ফোকাসের ক্ষমতা হারানোর কারণেই এমনটি ঘটে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
একজন ভুক্তভোগী মারিয়া খেসুস ব্লাংকো মন্টেস বলেছেন, ‘৪০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকেই আমার দৃষ্টিশক্তি অনেক খারাপ হয়ে যেতে থাকে। বিশেষ করে কাছের জিনিস দেখতে খুবই সমস্যা হতো। আমি কখনও চশমা পরতে চাইনি। তাই এই হাসপাতালে চিকিৎসার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চেয়েছি।’
এই হাসপাতালের আই সার্জেনরা মানুষের চোখের শক্ত হয়ে যাওয়া ক্রিস্টালাইন লেন্সের স্থানে কৃত্রিম বা মাল্টিফোকাল লেন্স বসিয়ে দিতে পারেন। তখন দূরের এবং কাছের বস্তু স্পষ্টভাবেই দেখা যায়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই আইডিয়াটি অসাধারণ হলেও এই মাল্টিফোকাল লেন্স এখনও পুরোপুরিভাবে নিখুঁত হয়ে ওঠতে পারেনি। খিমেনেস-ডিয়াস হাসপাতালের ইগনাসিও খিমেনেস-আলফারো মোরোটে এই বিষয়ে বলেছেন, ‘প্রেসবায়োপিয়ারের জন্য আরেও সমাধানসূত্র খোঁজা প্রয়োজন, যেটি মানুষের ক্রিস্টালাইন লেন্সের আচরণ হুবহু অনুকরণ করতে পারে।
মূলত আমরা যে লেন্স বসাচ্ছি, তা কাছের, মাঝের এবং দূরের বস্তু দেখা সহজ করলেও ঠিক এর আসল প্রক্রিয়ার অনুকরণ করতে পারে না।
জানা গেছে, এক ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পের আওতায় বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার সমাধান করতে এমন কিছু যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেছেন, যার সাহায্যে অরগানিক ইমপ্লান্ট স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তার আকার বদলাতে সক্ষম।
এই প্রকল্পের গবেষক সুসানা মারকোস বলেছেন, ‘অ্যাকোমোডেটিভ লেন্স ভবিষ্যতের লেন্স হতে চলেছে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কারণ হলো, এটি মানুষের চোখের ক্রিস্টালাইন লেন্সের ক্ষমতা নকল করতে সক্ষম।’
এই লেজার যন্ত্রের সাহায্যে সার্জেন চোখের ভেতরের কাঠামো খতিয়ে দেখার পর সেই মুহূর্তে সহজলভ্য বিকল্পগুলির মধ্য হতে সবচেয়ে উপযুক্ত লেন্স বেছে নিতে পারবেন।
সুসানা মারকোস আরও বলেছেন, ‘আমরা এমনকি ব্যক্তি অনুযায়ী ইনট্রাঅকুলার লেন্স তৈরি করার কথাই ভাবছি, যা সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যেক রোগীর তাদের নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন করা যাবে।’