দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ মোবাইল ফোন চুরি বর্তমানে বিশ্বে ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, শুধুমাত্র আমেরিকাতেই মোবাইল চুরি প্রোপার্টি ক্রাইমের সবচেয়ে বড় সেক্টর হিসেবে এ বছর দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে এবছর ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মোবাইল ফোন চুরি গেছে কেবল আমারিকাতেই।
এক প্রতিবেদনে দেখা যায় স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীদের ১০% ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোন চুরি যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের প্রায় সবারই মোবাইল ফোন চুরি যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তাই নিউইয়র্ক শহরের এটর্নি জেনারেল স্নেইডারম্যন সহ আমেরিকার অনেক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মোবাইল ফোন টেকনোলজি কোম্পানি ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি মোবাইল ফোন চুরি প্রতিরোধে ফোন সেটে ব্যবস্থা রাখার দাবি জানালেন। তার ভাষায় এ প্রযুক্তির নাম দেয়া যায় কিল সুইচ, যাতে মোবাইল চুরি যাওয়ার পর এটি আর কোন কাজে না আসে।
বর্তমানে আধুনিক স্মার্টফোন চুরি হলে ব্যবহারকারী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ফোনটির অপব্যবহার। বর্তমানে মোবাইল ফোন চালু রাখা কিংবা বন্ধ রাখা গেলেও দূর থেকে মোবাইল ফোনকে অকেজো করার পদ্ধতি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের বিশেষ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন এরই মাঝে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানদের নতুন প্রযুক্তি তৈরির বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির মোবাইল ফোন নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান অ্যাপল, স্যামসাং, গুগলসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এ বিষয়ে চিঠি পেয়েছে।
এটর্নি জেনারেল স্নেইডারম্যনের প্রস্তাবনা অনুসারে বিখ্যাত মোবাইল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান Apple তাঁদের ডিভাইসে এমন ব্যবস্থা সংযুক্ত করতে যাচ্ছে যাতে কেউ যদি মোবাইল ট্রেকিং প্রোগ্রামটি বারবার ভুল পাসওয়ার্ড দিয়ে বন্ধ করতে চায় তবে মোবাইল ফোনটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। মূলত অ্যাপলের আইফোন ৫ এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৪ স্মার্টফোন চুরি প্রতিরোধে নতুন এ প্রযুক্তি কতটা কার্যকর হবে, সেটিই পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে স্নেইডারম্যনের যুক্তি হচ্ছে “আপনি যদি আপনার চুরি যাওয়া ক্রেডিট কার্ডটি বন্ধকরে দিতে পারেন তবে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন কেন নয়? মোবাইল ফোনে কিল সুইচের এ ধারণা সংযুক্ত হলে বিষয়টি চমৎকার হবে।
এক্ষেত্রে অনেক টেকনোলজি বিশেষজ্ঞ বলছেন অন্য কথা, তাঁদের মতে কেবল মাত্র কিলার সুইচ সংযুক্ত করার ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জটিলতা আরও বাড়তে পারে। তাঁদের মতে মোবাইল ফোন স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে এমন সফটওয়্যারের ব্যবহার করা হলে সেটা মেল-ওয়্যারের টার্গেটে পরিণত হতে পারে।
মোবাইল সিকোরিটি কোম্পানি লুক আউট এর সহকারী উদ্যোক্তা মহাফি জানালেন তারা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যৌথ উদ্যোগে কিভাবে কিলার সুইচ প্রযুক্তিকে সঠিক ভাবে নিরাপদে কাজে লাগানো যায় তার বিষয়ে গবেষণা করছেন।
মহাফি বলেন, “কিল সুইচ প্রযুক্তি সঠিক ভাবে উদ্ভাবন করা গেলে হাজার হাজার মোবাইল ফোন চুরি ঠেকানো যাবে, তবে এ প্রযুক্তি যদি কেউ হঠাৎ হ্যাক করে ফেলতে পারে তবে সে বিপুল সংখ্যক মোবাইল সেট এক সাথে বিকল করে দিতে পারবে।“
এখন কথা হচ্ছে এ কিল সুইচ কি আসলেই মোবাইল ফোন সেট চুরি ঠেকাতে পারবে? আপাতত তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।
সূত্রঃ এনপিআর।