দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ বয়স বাড়লে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তবে ইদানীং কম বয়সীদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। নিয়মিত কয়েকটি যোগাসন করতে পারেন- যা আপনার ভুলে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
সন্ধ্যাবেলায় হয়তো কোনো অনুষ্ঠানে আপনার যাওয়ার কথা রয়েছে। সেই জন্যে অফিসেও চলে এসেছেন তাড়াতাড়ি। তবে বিকেল গড়াতেই বেমালুম ভুলে গেলেন সেই অনুষ্ঠানের কথা। আবার দেখা যায় আপনি চশমা ছাড়া দেখতে পান না। অথচ ঘুমোতে যাওয়ার সময় চশমা কোথায় রেখেছেন, সকালে উঠে তা কিছুতেই মনে করতেই পারছেন না। এমন ঘন ঘন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে অনেকেরই। অত্যাধিক মানসিক চাপের কারণে স্মৃতি মাঝে-মধ্যেই এমন বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। বয়স বাড়লে এই সমস্যা আরও জাঁকিয়ে বসে। তবে কম বয়সীদের মধ্যেও স্মৃতিশক্তির এমন দুর্বলতা লক্ষ করা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়। অনেকেই এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন। কাড়ি কাড়ি ওষুধ খাচ্ছেন। তবে কাড়ি কাড়ি ওষুধ না খেয়ে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দূর হতে পারে নিয়মিত কয়েকটি যোগাসনেও। জেনে নিন সেই যোগাসন সম্পর্কে।
সর্বাঙ্গসন
প্রথমেই চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর পা দু’টি জোড়া করে উপরে তুলুন। এখন দু’হাতের তালু দিয়ে পিঠ এমনভাবে ঠেলে ধরুন, যেনো ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত একই সরলরেখায় থাকে। থুতনিটি বুকের সঙ্গে লাগিয়ে রাখতে হবে। আর দৃষ্টি থাকবে পায়ের আঙুলের দিকে। স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। প্রতিদিন ৩-৪ বার এই আসনটি করতে হবে। এতে আস্তে আস্তে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।
বৃক্ষাসন
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দু’টি (নমস্কারের ভঙ্গিতে) বুকের কাছে আনুন। এরপর শরীরের ভারসাম্য রেখে নিজের ডান পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা বাঁ পায়ের উরুর উপর নিয়ে আসতে হবে। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড সোজা রেখে নিজের হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে সমানভাবে মাথার উপর নিয়ে যেতে হবে। ৩০ সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। ধীরে ধীরে এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। নিয়ম করে এই আসনটি করলে ভুলে গিয়ে বিপাকে পড়ার সমস্যা হবে না।
বালাসন
প্রথমে হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপরে বসতে হবে। তারপর দুই হাত প্রসারিত করে পেট মুড়ে সামনের দিকে ঝুঁকে যেতে হবে। বুক যেনো ঊরু স্পর্শ করে। মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে রাখতে হবে। শ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত এই আসনগুলো করলে উপকার পাবেন। তাহলে ভুলে যাওয়ার সমস্যাও হয়তো আর থাকবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org